জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী ও ‘ধূমকেতু’ পত্রিকার শতবর্ষ উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বিশেষ সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।
চবি নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে ‘ধূমকেতু পত্রিকার শতবর্ষ: ফিরে দেখা’ শিরোনামে আয়োজিত সেমিনারটি সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
চবি নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক।
সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম। আলোচক হিসবে ছিলেন চবি বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজ ও দৈনিক আজাদীর সহযোগী সম্পাদক ছড়াকার রাশেদ রউফ।
প্রবন্ধে ড. মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “সাংবাদিকতা এবং জনমত পরস্পর নির্ভরশীল। জনমত গঠনে সংবাদপত্র সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। সত্য সংবাদ প্রকাশ, ন্যায় ও সত্যের জন্য অবিরাম সংগ্রাম করা, শাসক শ্রেণির নির্দেশের কাছে মাথা নত না করা, মেহনতি মানুষের জীবন-জীবিকার সংগ্রামের সমর্থনে দাঁড়ানো অত্যাচারিত-উৎপীড়িত মানুষের কণ্ঠে প্রতিরোধের ভাষা দেয়া, গণতন্ত্রের জন্য এবং স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করা—এ সবই হচ্ছে সংবাদপত্রের সামাজিক দায়িত্ব। ঔপনিবেশিক শাসনামলে আজ থেকে ১০০ বছর পূর্বে ১৯২২ সালে কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘ধূমকেতু’ সেই দায়িত্বই পালন করছিল।”
চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক চেতনার নজরুলের মধ্যে কখনও আপস ভাব ছিল না। তারই বহিঃপ্রকাশ নজরুলের সাংবাদিক সত্তা এবং ধূমকেতুর সম্পাদনা। তিনি ধূমকেতুর সম্পাদকীয়তে ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ভাব তুলে ধরেছেন। কলমের ধার দিয়ে শোষকদের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রেখেছিলেন।’
শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নজরুলের চেতনা, কাজ নিয়ে আরও গবেষণা করতে হবে। নজরুলকে যতই চর্চা করা হবে, ততই নতুন করে জানা যাবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ, ইতিহাস বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসা উচিত। এসব বিভাগে আমাদের অনেক জ্ঞানী-গুণী শিক্ষক আছেন। তারা তাদের শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দেবেন।’
সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।