বাগেরহাটের মোংলায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহারের উদ্বোধন করা ঘাটশ্রমিকদের বিশ্রামাগারের সরকারি জমি দখল করে রাতারাতি মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে টিটু মাঝি ওরফে গয়না টিটু নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ঘাটশ্রমিকরা রোববার দুপুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মোংলা পোর্ট পৌরসভার ১ নম্বর জেটি এলাকার নদীর তীরে সরকারি জমিতে ঘাটশ্রমিকদের বিশ্রামাগার উদ্বোধন করেন ও দুটি গাছ রোপণ করেন।
মোংলা উপজেলা ঘাটশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক সরদার জানান, মোংলা পোর্ট পৌরসভার ১ নম্বর জেটিতে অবস্থিত এই বাজার ঘাট। মোংলা নদীর পাশে জেগে ওঠা চরে সরকারি জমিতে ছাউনি দিয়ে ঘাটশ্রমিকরা কাজ শেষে বিশ্রাম নিতেন। শ্রমিকরা যাতে ভালো করে বিশ্রাম নিতে পারেন, সে জন্য ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার শ্রমিক বিশ্রামাগারটি উদ্বোধন করেন। বিশ্রামাগার এলাকায় দুটি বট গাছের চারা রোপণ করেন।
তিনি আরও জানান, এ অবস্থায় নদীর চর পড়া সরকারি জায়গায় উপমন্ত্রীর লাগানো বট গাছ দুটি কেটে সেই জায়গা অবৈধভাবে দখল করে রাতারাতি মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন প্রভাবশালী টিটু মাঝি ওরফে গয়না টিটু।
আবদুর রাজ্জাক সরদার জানান, এ ঘটনায় প্রশাসন ও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও প্রতিকার না পেয়ে দুই শতাধিক শ্রমিক রোববার দুপুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
মোংলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নদীর চরের জায়গা সরকারের। ওই জায়গা কাউকে বরাদ্দ দেয়া হয়নি। অবৈধভাবে জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে সদর তহশিলদারকে (নায়েব) বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলেই মার্কেট গুঁড়িয়ে দেয়া হবে।’
মোংলা থানার ওসি মোহাম্মদ শামসুদ্দীন জানান, উপমন্ত্রীর রোপণ করা কেটে ফেলা বটগাছ দুটি থানায় নিয়ে এসে ঘাটশ্রমিকরা তাদের বিশ্রামাগারের জায়গায় মার্কেট নির্মাণ শুরু করার বিষয়ে টিটু মাঝি ওরফে গয়না টিটু নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের উদ্বোধন করা ঘাট শ্রমিকদের বিশ্রামের জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণের বিষয়ে টিটু মাঝি ওরফে গয়না টিটু জানান, তিনি চরের ওই জায়গা মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে মার্কেট করছেন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) শাহিনুর আলম বলেন, ‘আবেদন করলেই জায়গা পাওয়া যায় না। আবেদনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার বলেন, ‘যেকোনো গাছ কাটা পরিবেশের জন্য হুমকি। আমার লাগানো গাছ এবং শ্রমিকদের বিশ্রামের জায়গা কীভাবে দখল করে রাতারাতি মার্কেট হলো, সে ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’