বরিশালে জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও সিটি কাউন্সিলর একেএম মুরতজা আবেদীনের ওপর অতর্কিত হামলার অভিযোগ উঠেছে মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহম্মেদ মান্নার বিরুদ্ধে।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল নগরীর পোর্ট রোডে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় মুরতজার লাইসেন্স করা পিস্তল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টাও করেন মান্না।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মান্না। বরং মুরতজা তার ওপর হামলা করে গুলি চালানোর চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এই ঘটনায় পিস্তলসহ মুরতজা আবেদীনকে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। ঘটনার দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
মুরতজার করা ৮ মিনিটের ভিডিওতে মান্না ও তার অনুসারীদের ভূমি অফিসের সামনে অবস্থান করতে দেখা যায়। এরপর মান্না মুরতজার মধ্যে কিছুক্ষণ বাকবিতণ্ডতা হয়। এক পর্যায়ে মান্না ও তার সহযোগীরা মুরতজা আবেদীনের ওপর হামলা চালান। মান্না একটি অটোর মধ্যে মুরতজার কাছ থেকে পিস্তল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে বেশ কিছু সময় ধস্তাধস্তি হয়। পরে মান্নার এক সহযোগী পিস্তলটি নিয়ে যান।
ঘটনার সময়ে উপস্থিত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর শফিক আহমেদ বলেন, ‘ভূমি অফিস থেকে অস্ত্র হাতে মরতুজাসহ দুইজনে দৌড়ে একটি হলুদ অটোর মধ্যে ঢুকে পড়েন। এসময়ে কিছু লোক অস্ত্রসহ মরতুজাকে ধরে পুলিশ খবর দেয়।’
ভুক্তভোগী মুরতজা বলেন, ‘আমার ওপর হামলা হতে পারে সেটা আমি আগেই আন্দাজ করতে পেরেছিলাম। বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকেই ওরা আমাকে ফলো করছিলে। ভূমি অফিস থেকে বের হওয়ার পর পরই মান্নার লোকজন আমার ওপর হামলা চালায়। আমার লাইসেন্স করা পিস্তল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।’
অভিযুক্ত মান্না বলেন, ‘আমি পারিবারিক জমি সংক্রান্ত কাজে সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসে যাই। কাজ শেষে বেরিয়ে আসলে মরতুজা আমাকে গালিগালাজ করে। প্রতিবাদ করলে হঠাৎ পিস্তল বের করে গুলি করতে উদ্যত হয়। আমার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, ‘অস্ত্রটি আমাদের হেফাজতে আছে। কাউন্সিলর সাহেবও থানায় আছেন। আমরা বিষয়টা দেখছি। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হবে।’
প্রসঙ্গত, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মরতুজার অভিযোগের কারণে ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রার্থীতা হারান রইজ আহম্মেদ মান্না। কাউন্সিলর নির্বাচন নিয়ে এই দুই রাজনৈতিক নেতার সমর্থকদের মধ্যে এর আগে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। মরতুজার কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় মান্নাকে তখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।