সুন্দরবন খুলে দেয়ার প্রথম দিনই পর্যটকদের ঢল নেমেছে। ছোট ছোট লাইটার বোট, ট্রলার ও লঞ্চে করে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ভিড় করছেন করমজলে।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, পর্যটকদের কাছে সুন্দরবনকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে করমজল পর্যটনকেন্দ্রে নির্মাণ করা হয়েছে ঝুলন্ত ব্রিজ, তথ্যকেন্দ্র, ফুট ট্রেইলার, ওয়াচ টাওয়ার ও প্রশস্ত রাস্তাসহ নান্দনিক সব স্থাপনা। এছাড়া সুন্দরবনের আলিবান্দা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিকে তৈরি করা হয়েছে নতুন দুটি পর্যটন স্পট। ঢেলে সাজানো হয়েছে সুন্দরবনের অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলোও।
তবে ভালো মানের হোটেল-মোটেল না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়ছেন বলে অভিযোগ করেছেন সুন্দরবনে ঘুরতে আসা পর্যটকরা। পর্যটক ও ট্যুর অপারেটররাও সুন্দরবনের পর্যটন শিল্প বিকাশে হোটেল-মোটেলসহ উন্নতমানের নৌযানের দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা সালমা বেগম নামের এক পর্যটক বলেন, ‘এ নিয়ে দ্বিতীয়বার সুন্দরবন ভ্রমণে এসেছি। খুবেই ভালো লাগছে। বিশেষ করে ঝুলন্ত ব্রিজ ও চলাচলের জন্য নতুন নতুন ফুট ট্রেইলার নির্মাণ খুবই ভালো হয়েছে। এগুলো আগে ছিলো না। এখানে একটি বড় সমস্যা হচ্ছে, ভালো মানের কোনো খাবারের হোটেল ও থাকার জন্য মোটেল নেই। যে কারণে ইচ্ছা থাকলেও রাতে থাকা যায় না। খুব ইচ্ছা ছিলো আরও দুই-একদিন থেকে সুন্দরবনের অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখা।’
বোটচালক জাকির হোসেন বলেন, ‘সুন্দরবন দেখতে প্রচুর দেশি-বিদেশি পর্যটকরা আসেন। কিন্তু ভালো মানের কোনো খাবার হোটেল বা থাকার জন্য উন্নত মানের আবাসিক হোটেলের স্বল্পতা রয়েছে। এ কারণে ইচ্ছা থাকলেও পর্যটকরা এখানে এক দিনের বেশি থাকতে পারেন না। পর্যটকরা যদি একটু বেশি সময় নিয়ে সুন্দরবন ভ্রমন করতে পারেন, সেক্ষেত্রে আমাদের আয়-রোজগারও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া উন্নতমানের নৌযান কম থাকায় সুন্দরবনের অনেক খাল ও নদীতে পর্যটকরা যেতে পারেন না। এর ফলে সুন্দরবনের অনেক সুন্দর সুন্দর দৃশ্য থেকে পর্যটকরা বঞ্চিত হচ্ছেন।’
সুন্দরবন করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘সুন্দরবনকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আরও বেশি আকৃষ্ট করতে করমজলে এক কিলোমিটার নতুন ফুট ট্রেইলার নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া একটি ঝুলন্ত ব্রিজ ও একটি আরসিসি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে পর্যটকরা বনের সব তথ্য জানার জন্য করমজলে নির্মাণ করা হয়েছে ইনফরমেশন সেন্টার।’
তিনি বলেন, ‘তিন মাস বন্ধ থাকার পর খুলে দেয়ার প্রথম দিনই করমজলে পর্যটকের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। আমরা বনরক্ষীরা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। এছাড়া গত অর্থবছরে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে পর্যাটক আগমনের সংখ্যা ছিলো ১ লাখ ৩৭ হাজার। আর রাজস্ব আদায় হয়েছিলো ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ বছর পর্যাটকদের সংখ্যা ও রাজস্ব আদায় দ্বিগুণ হবে বলে আশা করছি।’