চট্টগ্রামে ঘুমন্ত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে তার ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত ৬০ বছর বয়সী বাদশা সওদাগর স্থানীয় শাহাদাত মার্কেটের বাদশা ডেকোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক।
বাবাকে হত্যার অভিযোগে আটক এনামুল হক বাদশা সওদাগরের তৃতীয় ছেলে।
জেলার বাঁশখালী উপজেলার পূর্ব পুইছড়িতে শুক্রবার ভোরে বিছানায় বাদশা সওদাগরের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা।
পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে খবর দিলে বাঁশখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আলামত সংগ্রহ করে।
বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হাওলাদার বলেন, ‘আমরা সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলামত সংগ্রহ করার পাশাপাশি পরিবারের সকল সদস্যের সাথে কথা বলার জন্য তাদের থানায় নিয়ে আসি। জিজ্ঞাসাবাদের সময় পরিবারের ছোট ছেলে এনামুলের কথায় সন্দেহ হলে তাকে গভীরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে পিতাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
‘এনামুল আগের রাগ ও ক্ষোভের কারণে ভোর রাতে ঘুমন্ত বাবাকে তিন কোপ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন বলে আমাদের জানান। পরে দা থেকে রক্ত মুছে রান্না ঘরে রেখে এসে নিজ রুমে ঘুমাতে চলে যান এনামুল।’
হত্যার খবর পেয়ে সংবাদ সংগ্রহের জন্য সকালে পরিবারের সদস্য হিসেবে অভিযুক্ত এনামুল হকের সঙ্গে কথা বললে তিনি নিউজবাংলাকে জানান, তার বাবাকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি খুন করেছে। তিনি তখন আরও জানায় প্রতিদিন ভোরে বাবা নামাজ পড়তে উঠে যান।
তিনি বলেন, বাবার ঘরে সাড়া শব্দ না পেয়ে খুঁজতে গেলে বাবার রক্তাক্ত দেহ দেখতে পেয়ে আমরা দিশেহারা হয়ে যাই। কথা বলার ভাষা আমাদের নেই। আমার বাবার সাথে কারও হয়তো লেনদেন কিংবা অন্য কারণে বিরোধ ছিল। অথবা কেউ ডাকাতি করতে এসেছিল, বাবা তাদের চিনে ফেলায় তারা বাবাকে খুন করতে পারে।
এনামুলের সঙ্গে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড নিউজবাংলার হাতে সংরক্ষিত আছে। ওই সময় প্রতিবেদক এনামুলকে আরও কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, নিহত বাদশাহ সওদাগরের তিন ছেলে ও চার কন্যা সন্তান রয়েছে। স্থানীয় বাজারে দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সাথে ডেকোরেশনের ব্যবসা করে আসছেন তিনি।
তারা জানান, কারও সঙ্গে কখনো ঝগড়া বিবাদে জড়িয়েছেন এমন নজির নেই। এমন লোক এই বয়সে ঘুমন্ত অবস্থায় নিজের ছেলের হাতে খুন হতে পারে বিষয়টা মেনে নিতে পারছেন না তারা। এনামুল প্রেম মেনে না নেয়ার ক্ষোভ থেকে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে বলে ধারণা তাদের।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুরিদুল আলম চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মোহাম্মদ বাদশাহ একজন প্রবীণ ব্যবসায়ী। আমার জানামতে কারো সঙ্গে এমন বিরোধ নেই যার জন্য এই বয়সে তাকে নির্মম খুনের শিকার হতে হবে। যতটুকু জানি সে (এনামুল হক) একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে। তার বাবা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে ক্ষোভ থেকে এমন জঘন্য কাণ্ড ঘটিয়েছে। পুলিশ এসেছে, বিষয়টি তারা তদন্ত করছে।’