তিন মাস বন্ধ থাকার পর শুক্রবার সবার জন্য সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার উন্মুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিন পর বনে প্রবেশের সুযোগ পেলেন বনজীবী ও পর্যটকরা, তবে ম্যানগ্রোভ বনটিতে প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বন বিভাগ।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনে সম্পদ আহরণের জন্য ১২ হাজার নৌকা ও ট্রলারকে বোর্ড লাইসেন্স সার্টিফিকেট (বিএলসি) দেয়া হয়েছে। এসব নৌযানের মাধ্যমে প্রতি বছর এক থেকে দেড় লাখ জেলে, বাওয়ালি ও মৌয়ালি সুন্দরবনের সম্পদ আহরণ করেন।
সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগের বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, ‘ইতোমধ্যে বনে জেলেরা অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করেছে। এখন গোলপাতা ও মধু আহরণের মৌসুম নয়। অনুমতি নিয়ে বনজীবীরা শুধু মাছ ও কাঁকড়া আহরণ করতে পারবেন।’
সুন্দরবনে বর্তমানে ১১টি ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র চালু রয়েছে। সেখানে প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ ৫ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করেন।
সুন্দরবনের করমজল ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবীর বলেন, ‘বনে আসা শতকরা ৯০ ভাগ পর্যটক একবার হলেও করমজলে আসেন। এটি স্থলভাগের সব থেকে কাছে হওয়ায় সহজে পর্যটকরা আসতে পারেন। পুনরায় পর্যটকদের জন্য ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র চালু হয়েছে। সকাল থেকে পর্যটক আসতে শুরু করেছে।’
এবার পর্যটকদের জন্য কিছু কড়াকড়ি নিয়ম করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো।
তিনি বলেন, ‘প্লাস্টিক বন্ধে এবার কঠোর অবস্থান নিয়েছে বন বিভাগ। বনের অভ্যন্তরে পানি ও স্থলভাগে যাতে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক, পলিথিন ও অপচনশীল দ্রব্য ফেলতে না পারে, সে জন্য সুন্দরবনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তারা সবসময় নজরদারি করবেন। এরপরও যদি কেউ প্লাস্টিকের এসব সামগ্রী বনের মধ্যে নিয়ে যায়, তাহলে তাকে আইনের আওতায় এনে জরিমানা করা হবে।’
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অফ সুন্দরবনের সাধারণ সম্পাদক এম নাজমুল আযম ডেভিড বলেন, ‘তিন মাস ট্যুর অপারেটরগুলোর কোনো কাজ ছিল না। আজ কয়েকটি লঞ্চ পর্যটক নিয়ে বনে যাবে।’
প্রতি বছর তিন মাস (জুন থেকে আগস্ট) সুন্দরবনে সব ধরনের রাজস্ব আহরণ বন্ধ রাখে বন বিভাগ। সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা, বন্যপ্রাণী এবং নদী-খালের মাছের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় এ পদক্ষেপ নেয়া হয়।
২০১৯ সাল থেকে নেয়া এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশ, সাধারণ মানুষের চলাচলসহ নদী ও খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে।