ঝালকাঠি জেল হাজতে থাকা এক বন্দীর স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ উঠেছে কারাগারের জেলারের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে কারা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক বরাবর বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী ওই নারী।
বুধবার অভিযোগপত্রটি ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী।
কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শকে পাঠানো ভুক্তভোগী নারীর লিখিত অভিযোগের কপি এবং জেলারের সঙ্গে ফোনে কথোপকথনের কয়েকটি অডিও রেকর্ড নিউজবাংলার হাতে এসেছে।
অভিযুক্ত মো. আক্তার হোসেন শেখ ঝালকাঠি জেলা কারাগারের বর্তমান জেলার হিসেবে কর্মরত।
ঝালকাঠি কারাগারের জেলারের মাধ্যমে কুপ্রস্তাব ও অশালীন আচরণ প্রসঙ্গে অভিযোগপত্রে ওই নারী লিখেছেন, একটি মামলায় চলতি বছরের ২৯ জুলাই আমার স্বামীকে জেল হাজতে পাঠায় আদালত। পরদিন ৩০ জুলাই স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য আমি কারাগারে যাই, কিন্তু দেখা করতে পারিনি। ওইদিনই জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখের সরকারি নম্বরে কল করে স্বামীর সঙ্গে দেখা করার কথা জানাই। তিনি আমাকে আমার স্বামীর সঙ্গে দেখার ব্যবস্থা না করিয়ে ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেন।
অভিযোগপত্রে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ওইদিন থেকেই জেলার আক্তার হোসেন আমার নম্বরে নিয়মিত কল দেয়া শুরু করেন। তিনি আমাকে আমার স্বামীর সঙ্গে প্রতিদিন কথা বলিয়ে দিবে বলে আমার হোয়ার্টসঅ্যাপ নম্বর চেয়ে নেন। এরপর ভিডিও কলের মাধ্যমে জেলার আমার সঙ্গে যৌন আলোচনা শুরু করেন। ভিডিও কলে তিনি আমার গোপনাঙ্গ দেখতে চান। এছাড়াও তিনি আমার সঙ্গে রাত্রিযাপনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। আমি তার এসসব অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হলে আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দিবে না এবং তাকে জেলখানায় কষ্ট দিবে বলে তিনি আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
ভুক্তভোগী নারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জেলার আমাকে আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে জেলখানার গেটে নিষেধ করে দিয়েছেন। ২টি শিশু নিয়ে জেলখানার গেটে সকাল থেকে বিকেল দাঁড়িয়ে থাকি আমি। গতকাল জেলগেটে গেলে এক কারারক্ষী আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করানোর জন্যে দুই হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। তাকে টাকা দিতে না পেরে বাড়ি ফিরে আসতে হয়।‘
এ বিষয়ে ঝালকাঠির জেল সুপার মিলন চাকমা বলেন, ‘একটি অভিযোগ কারা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে, অন্য মাধ্যমে জানতে পেরেছি। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।‘
বরিশাল বিভাগীয় ডিআইজি (কারাগার) মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। ঘটনা যদি সত্য হয়, তাহলে এটা লজ্জাস্কর ও দুঃখজনক। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’