বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শেষ কর্মদিবসে কাঁদলেন প্রধান বিচারপতি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ৩১ আগস্ট, ২০২৩ ১৪:৫৬

কান্নাজড়ানো কণ্ঠে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘আবার দেখা করব, কোথায় জানি না, কখন জানি না, তবে জানি আমাদের আবার দেখা হবে কোনো এক রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে। আমি বিচার বিভাগকে বেশি ভালোবেসে ফেলেছিলাম এবং আমি চেষ্টা করেছি স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে।’

শেষ কর্মদিবসে বিদায় সংবর্ধনায় বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের এক নম্বর কোর্টে তাকে বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয়।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘বিদায় মুহূর্তে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি আমার মরহুম বাবা-মাকে। আমার জন্য এবং আমাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জন্য অপরিসীম কষ্ট আর ত্যাগ স্বীকার করে তারা জান্নাতবাসী হয়েছেন।’

ওই সময় প্রধান বিচারপতি কিছুটা সময় চুপ করে থাকেন। ভার হয়ে ওঠে তার কণ্ঠ। ওই সময় আদালতে উপস্থিত থাকা তার বড় মেয়ে ফারিয়া ফয়েজ এবং সাত বছরের নাতি আহসাফ আবরার হাসানকেও কাঁদতে দেখা যায়।

আইন অঙ্গনে ৪৩ বছরের স্মৃতিচারণ করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘আজ থেকে স্মৃতি হয়ে থাকবে। আমি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের মহাশক্তিতে বিশ্বাস করি। তিনি এই পবিত্র বিচারালয়, বিজ্ঞ বিচারকগণ, বিজ্ঞ আইনজীবীগণ, বিচারালয়ের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের রক্ষা ও সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করবেন।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আবার দেখা করব, কোথায় জানি না, কখন জানি না, তবে জানি আমাদের আবার দেখা হবে কোনো এক রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে। আমি বিচার বিভাগকে বেশি ভালোবেসে ফেলেছিলাম এবং আমি চেষ্টা করেছি স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে।’

দেশের মামলাজট থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখেন উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিজয়ের স্বপ্ন দেখি। বিজয়ী হওয়ার রাস্তা যতই দীর্ঘ হয় না কেন, বিজয় ছাড়া বাঁচা যায় না। সারা দেশের বিচারকগণ মামলাজট সংগ্রামে বিজয়ী হবেন।’

নতুন প্রধান বিচারপতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় আমার উত্তরাধিকারী গুরুতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবেন এবং আমি এটাও মনে করি মহান আল্লাহতায়ালা তাকে সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার অধিকারী করবেন এবং বিচার বিভাগকে আরও গতিশীল বিচার বিভাগে পরিণত করবেন।

‘আমার কাছে মনে হচ্ছে, আমি আমার বিচার বিভাগ তার কাছে হস্তান্তর করতে যাচ্ছি, যিনি এই বিভাগকে আরও গতিশীল করার জন্য ক্ষমতাবান এবং মনোযোগী হবেন।’

পরিশেষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার থেকে কয়েকটি লাইন পড়ে বিদায় নেন প্রধান বিচারপতি।

দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর মেয়াদকাল শেষ হবে, তবে এ সময় কোর্টের অবকাশকালীন ছুটি থাকায় বৃহস্পতিবার শেষ বিচারিককাজ শেষ করেন তিনি।

২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শপথবাক্য পাঠ করান।

বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ১৯৫৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

পড়ালেখা শেষে ১৯৮১ সালের ২১ আগস্ট জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে যোগ দেন হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। ১৯৮৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এবং ১৯৯৯ সালের ২৭ মে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর