বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাজনৈতিক হাওয়ামুক্ত থেকে বিচারকাজ করতে হবে: প্রধান বিচারপতি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ৩১ আগস্ট, ২০২৩ ১৩:২১

প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যের শুরুতে বলেন, ‘বিচার বিভাগ প্রজাতন্ত্রের হৃদপিণ্ড। রাষ্ট্রের বিচার বিভাগের দক্ষতার চেয়ে শ্রেষ্ঠত্বের আর কোনো উপযুক্ত পরীক্ষা নেই। একটি দেশের জনগণ শাসন বিভাগ বা আইন বিভাগের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলতে পারে কিন্তু বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা হারালে সে জাতিকে খারাপ দিনটির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’

বিচারকদের রাজনৈতিক আবহাওয়া থেকে মুক্ত রেখে বিচারকাজ পরিচালনার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, সংবিধান, আইন নিজেদের বিচারিক বিবেকের প্রতি পরিপূর্ণ অনুগত্য থেকে বিচার কার্য সমাধান করতে হবে।

বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের এক নম্বর কোর্টে কর্মদিবসে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যের শুরুতে বলেন, ‘বিচার বিভাগ প্রজাতন্ত্রের হৃদপিণ্ড। রাষ্ট্রের বিচার বিভাগের দক্ষতার চেয়ে শ্রেষ্ঠত্বের আর কোনো উপযুক্ত পরীক্ষা নেই। একটি দেশের জনগণ শাসন বিভাগ বা আইন বিভাগের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলতে পারে কিন্তু বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা হারালে সে জাতিকে খারাপ দিনটির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আইনের নিরঙ্কুশ আধিপত্য বা প্রাধান্য কার্যকর করার দায়িত্ব বিচার বিভাগের। বিচার বিভাগ যদি আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ করতে ব্যর্থ বা পিছপা হয় তাহলে রাষ্ট্রর এবং নাগরিক ক্ষতিগ্রস্থ হতে বাধ্য।’

বিচার বিভাগ জনগণের মৌলিক অধিকারের রক্ষক উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের বিকাশ, আইনের শাসন সংরক্ষণ এবং সমাজের দুর্বল অংশের অধিকার এবং সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অপরিহার্য।’

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাব থেকে বিচার বিভাগকে মজবুত দেয়াল দিয়ে রক্ষা করার দায়িত্ব বিচারকদের, আইনজীবীদের এবং রাষ্ট্রের প্রত্যেক দায়িত্বশীল নাগরিকের। সবাই সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে সর্বনাশা দিনের জন্য প্রতিটি নাগরিকের অপেক্ষা করতে হবে।’

রাজনৈতিক বিভক্তি রাজপথ অতিক্রম করে বিচারালয় অভিমুখে ধাবিত হলে সেটা বিচারলয়ের জন্য মঙ্গলজনক হয় না উল্লেখ করে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘আইনজীবীদের বিভক্তি ও মতভেদ এবং তার প্রতিক্রিয়া বিচারালয়কে ক্ষতিগ্রস্থ করে। রাজনৈতিক মতাদর্শ রাজনৈতিকভাবে বাস্তবায়ন করলে এবং বিচারলয়কে নিরাপদ দূরত্বে রাখলে বিচার বিভাগ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দায়িত্ব পালনে আমরা ব্যর্থ হলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। আমাদের প্রতিটি আইনে মানবিকতার স্পর্শ থাকতে হবে। আইন যদি দরিদ্রকে পিষে দেয় আর ধনী ব্যক্তি যদি আইনকে পিষে দেয় তাহলে রাষ্ট্র এবং বিচার বিভাগ সঠিকভাবে চলছে এটা কোনভাবেই বলা যাবে না।’

শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য শক্তিশালী ও স্বাধীন বিচার বিভাগ অপরিহার্য বলে জানান তিনি।

বিচারকদের রাজনৈতিকভাবে বয়ে যাওয়া হাওয়া থেকে নিজেদের মুক্ত রেখে, সংবিধান, আইন নিজেদের বিচারিক বিবেকের প্রতি পরিপূর্ণ অনুগত থেকে বিচার কার্য সমাধান করতে আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি।

তিনি বলেন, ‘আমি বাংলার, বাংলা আমার এবং আমি মুসলিম, আমি বাঙ্গালী আর ৭১ আমার প্রেরণা। আমি চেষ্টা করেছি জনগণের ইচ্ছা এবং আকাংখাকে আমার কাজের মধ্যে প্রতিফলন ঘটাতে। জুডিসিয়ারিকে সুশৃংখল এবং গতিশীল করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি।’

আইনজীবীদের প্রতি প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘রাজনীতিবিদ ও আইনজীবীদের অনুরোধ করবো বিচারালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে রাষ্ট্র সৃষ্টিতে ত্যাগের কথা অন্তত ১০ বার ভাববেন, আপনাদের সিদ্ধান্তে ভুল হলে শেষ বিচারে তাতে রাষ্ট্রের ক্ষতি হয়। ক্ষতি হয় বিচার বিভাগের।’

এ সময় তিনি সাংবাদিক, সুপ্রিমকোর্টের রেজিষ্ট্রির প্রত্যেক কর্মকর্তা এবং কর্মচারীকে ধন্যবাদ জানান।

এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির সংবর্ধনায় বক্তব্য দেন।

সংবর্ধনা শুরু হওয়ার আগেই পুরো আপিল বিভাগ ভরে যায় শত শত আইনজীবীতে। তবে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের আদালতে দেখা যায়নি। তারা সংবর্ধনা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে নীচ তলায় ব্যানার টানিয়ে কর্মসূচি পালন করেছেন।

এ বিভাগের আরো খবর