চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণকাজ শতভাগ সম্পন্ন হওয়ায় তা যানবাহন চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী।
তাকে উদ্ধৃত করে বুধবার বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এখন চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ চলছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী অক্টোবরে টানেলটি উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে অক্টোবরে টানেলটি খুলে দেয়া হবে।
এর আগে গত ১৪ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করবেন।
নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল বঙ্গবন্ধু টানেল। কর্ণফুলী নদীর দুই তীরকে সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই নগরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেল প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেতু বিভাগ।
সেতু বিভাগ থেকে জানা যায়, দুই টিউব সংবলিত মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিলোমিটার। এই দুই টিউব তিনটি সংযোগপথের (ক্রস প্যাসেজ) মাধ্যমে যুক্ত থাকবে। বিপদের সময়ে অন্য টিউবে গমনের জন্য ক্রস প্যাসেজগুলো ব্যবহার হবে। টানেল টিউবের দৈর্ঘ্য ২.৪৫ কিলোমিটার ও ভেতরের ব্যাস ১০.৮০ মিটার।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং টানেল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজ উদ্বোধন করেন। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয় টিউবের বোরিং কাজ উদ্বোধন করেন।
সেতু বিভাগ বলছে, চীনের এক্সিম ব্যাংক এই প্রকল্পের জন্য ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা ঋণ দেয়। বাকি টাকার জোগান দেয় বাংলাদেশ সরকার। চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি টানেলটি নির্মাণ করছে।
৩.৩২ কিলোমিটার টানেলটি কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে পশ্চিম প্রান্তে পতেঙ্গা নেভাল একাডেমির কাছ থেকে শুরু হয়ে পূর্ব প্রান্তে চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা (সিইউএফএল) এবং কর্ণফুলী সার কারখানার (কাফকো) মাঝখান দিয়ে আনোয়ারা প্রান্তে পৌঁছেছে।
মূল টানেলের সঙ্গে পশ্চিম প্রান্তে (পতেঙ্গা) দশমিক ৫৫০ কিলোমিটার ও পূর্ব প্রান্তে (আনোয়ার) ৪.৮ কিলোমিটারসহ মোট ৫.৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে। এ ছাড়াও আনোয়ারা প্রান্তে সংযোগ সড়কের সঙ্গে ৭২৭ মিটার ভায়াডাক্ট (উড়ালসড়ক) রয়েছে।