নওগাঁয় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজশে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ও ৫টি গাছ অনিয়মের মাধ্যমে নিলামে কিনে নেয়ার অভিযাগ উঠেছে দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের এসব মালামাল মাত্র ১ লাখ ১২ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে জেলা ছাত্রলীগের নেতাদের কাছে।
সম্প্রতি জেলার বদলগাছীর তেতুলিয়া ও সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন দুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এছাড়া কোলা ও বিষ্ণেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫টি গাছ একইসঙ্গে নিলামে বিক্রি হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুরে এসব মালামাল প্রকাশ্যে নিলাম হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই কোনোরকম নোটিশ বা প্রচার না করেই সেগুলো বিক্রি করে দেয়া হয়। আর এসব ভবন ও গাছ কিনে নেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন এবং বদলগাছী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত।
স্থানীয় কোলা ইউনিয়নের রব্বানী নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘ভবনগুলো ও গাছ প্রকাশ্যে নিলাম হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রচার ছাড়াই ৫ লাখ টাকার মালামাল গোপনে মাত্র ১ লাখ ১২ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমিও নিলামে অংশগ্রহণ করতে চেয়েছিলাম। তবে ছাত্রলীগের ছেলেদের বাধার মুখে সরে আসি। নিলামে শিক্ষা কর্মকর্তা আমার নাম দেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদ হোসেন ও কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত অনিয়মের কথা অস্বীকার করেন।
জাহিদ বলেন, ‘কাজ না পেয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে একদল লোক। নিলামে কোনো অনিয়ম হয়নি।’
তেতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘আমি মসজিদের মাইকে ভবন নিলামের বিষয়টি সকলকে জানিয়েছি। তবে নোটিশ টাঙানো হয়নি।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামকে বলেন, ‘নোটিশ টাঙানো হয়নি। তবে নোটিশ টাঙানো কথা প্রতিটি স্কুলের শিক্ষকদের বলা ছিল। আমার জানামতে, মসজিদের মাইকে নিলামের বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে ইউএনও আলপনা ইয়াছমিন বলেন, ‘নিলামের নোটিশ আমি পেয়েছি। কেন নোটিশ টাঙানো হলো না, বিষয়টি আমি দেখব। নিলামে কোনো আনফেয়ার (অনৈতিক) কিছু হচ্ছে কি না, সেটা দেখেন। অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’