জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পারাটাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘বিগত কয়েকটি নির্বাচনে জনগণ ভালো পরিবেশে ভোট দিয়েছে। আগামীতেও ভালোভাবে ভোট দিতে পারবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে তারাই ক্ষমতায় আসবে- এটাই বিশ্বাস করি।’
দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে মঙ্গলবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ভোর চোর, ভোট ডাকাত, জাতির পিতার হত্যাকারী, যুদ্ধাপরাধী খুনি, দুর্নীতিবাজ, অর্থ পাচারকারী, গ্রেনেড হামলাকারীরা অংশ নিলেই নির্বাচন বৈধ হবে আর অন্যরা নিলে হবে না, সেটা তো হতে পারে না। জনগণ তাদের ঘৃণা করে।’
প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণটা কার? ভোট চোর, খুনি, জাতির পিতার হত্যাকারী, ২১ আগস্টের হামলাকারীদের? এদেরকে মানুষ চায়? এদের প্রতি তো মানুষের ঘৃণা আছে। ২০০৮ সালে তা প্রমাণ হয়েছে।
‘আমার কাছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে জনগণের অংশগ্রহণ। সেটা থাকবে। জনগণ এরই মধ্যে সব নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারে সেটাই অংশগ্রহণমূলক।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই দলটি ক্ষমতায় গেলে আবার দুর্নীতি করবে। কিছু টাকা যাবে গুলশানে, কিছু যাবে হাওয়া ভবনে, বাকিটা যাবে লন্ডনে। নিজেরা নিজেরা মারামারি করবে, দুর্নীতি করতে করতে এক সময় তারা বলবে- আমরা পারবো না। সেই দলকে জনগণ ভোট দেবে? এরা তো ২০০৮ সালের পর নির্বাচনই করেনি, করেছে শুধু মনোনয়ন বাণিজ্য।’
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে যখন গেলাম, যার সঙ্গে দেখা হয়েছে জিজ্ঞাসা করেছে- কী করে বাংলাদেশ এতো উন্নতি করলো? আর দেশের এরা এটা বলে না। তারা পরশ্রীকাতরতায় ভোগে। আমি ওটা নিয়ে চিন্তা করি না। যতক্ষণ আছি, দেশের জন্য কাজ করে যাব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এতো উন্নয়নের পর এখন জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কী চায়। মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি, কোনো খাদ্য ঘাটতি নেই। যা কিছু করেছি, সব তো জনগণের কাজে লাগছে। সবই তো জনগণ ভোগ করছে।
‘মেট্রোরেল করতে গিয়ে আমাদের নানা কথা শুনতে হয়েছে। সব জায়গায় কথা শুনতে হচ্ছে। আর উন্নয়ন করে সবার প্রশংসা পাব, এটা আশা করিও না। আশা করাও ঠিক হবে না। যাদের এক সময় জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছিল তারা তো এখন সমালোচনা করবেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের জন্য কাজ করছি, জনগণের জন্য আছি। ১৪ বছরের মধ্যে দেশকে কোথায় নিয়ে এসেছি, সেটাও দেখতে হবে। টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশে দ্রুত একটি পরিবর্তন আনা সহজ হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
‘আওয়ামী লীগ সুদূরপ্রসারী প্ল্যান করে রাখে। যখনই ক্ষমতায় আসি সেগুলো নিয়ে কাজ করি। ডিজিটাল রূপকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। দেশে একটাও গরিব মানুষ থাকবে না।’
এ সম্পর্কিত অপর এক প্রশ্নের জবাবে আগামী কয়েক মাসে দেশে কী হচ্ছে কী হবে সেটার জবাব জনগণ দেবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। কিছু সমালোচক থাকবেই উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘কে কী বলল সেটা নিয়ে আমি কমই চিন্তা করি।’
‘আপনারা আশা করেন কীভাবে যে সবাই খালি প্রশংসা করবে। একটা শ্রেণি আছে, আপনি যাই ভালো করেন সেটাই খারাপ দেখবে। তারা থাকবেই, না হলে তো আপনারা (সাংবাদিক) লেখার কিছু পাবেন না।’