অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বর্তমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে বিবৃতিদাতাদের আইনজীবী বা বিশেষজ্ঞ পাঠানোর আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘তারা এসে মামলার দলিল-দস্তাবেজ দেখুক- ভুল কিছু আছে কি না, ড. ইউনূস অন্যায় করেছেন কি না। ভদ্রলোকের যদি এতোই আত্মবিশ্বাস থাকে যে তিনি অপরাধ করেননি, তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না।’
মঙ্গলবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে শতাধিক নোবেলজয়ীসহ ১৬০ জনেরও বেশি বিশ্ব ব্যক্তিত্বের বিবৃতি প্রসঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে। সেখানে আমাদের কিছু করার নেই। কেউ যদি ট্যাক্স না দেয়, শ্রমিকদের মজুরি না দেয়, আবার মজুরি না দিয়ে মামলা বন্ধ করতে ঘুষ দেয়, সেখানে ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার পাওয়া উচিত। আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় ন্যায়বিচারের পক্ষে। নির্দোষ হলে ড. ইউনূস বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দুর্নীতি খুঁজে বেড়াচ্ছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান করতে বলেছেন। কিন্তু দুর্নীতিবাজ পছন্দের লোক হলে আবার এগুলো নিয়ে কথা আসছে। কেন? আইন তো তার নিজস্ব গতিতে চলবে। মামলা তো আমরা করিনি। এনবিআর থেকে আয়কর ফাঁকির মামলা করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত লেবাররা মামলা করেছেন।’
নোবেলজয়ী বলে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে না- এমন প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন বহু নোবেল বিজয়ী আছেন, পরবর্তীতে তাদের কাজের জন্য কারাগারে আছেন (যেতে হয়েছে)।’
বিবৃতির ফলে আদালত প্রভাবিত হবে কি না, স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পারবে না কেন? আদালত স্বাধীনভাবে চলেব। ভয় পেলে চলবে না। শ্রমিকদের পাওনা তাদের দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এখন যদি জিজ্ঞেস করি- গ্রামীণ ব্যাংক কিন্তু সরকারি (নিয়মে চলে)। তাহলে সরকারি বেতনভুক্ত একজন কীভাবে বিদেশে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেন? কীভাবে তিনি এগুলো করেন?’
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ২২ আগস্ট দেশটিতে যান সরকারপ্রধান। সফর শেষে ২৭ আগস্ট সকালে দেশে ফেরেন তিনি।