প্রায় এক যুগ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে গাইবান্ধার বোনারপাড়া-দিনাজপুর রুটে ‘রামসাগর এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি পুনরায় চালু হয়েছে।
এবার বোনারপাড়া-দিনাজপুর নয়, মেইল ট্রেনটি চলবে বোনারপাড়া হতে উত্তরের শেষ জেলা পঞ্চগড় পর্যন্ত।
গাইবান্ধার বোনারপাড়ায় মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে ট্রেনটির উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
তিনি বলেন, ‘ট্রেনটি চালু হওয়ায় সুবিধা ভোগ করবে গাইবান্ধার ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী ও চিকিৎসা সেবাপ্রত্যাশীসহ এ অঞ্চলের অনেক মানুষ।’
বোনারপাড়া রেলওয়ে স্টেশন সংশ্লিষ্টরা জানান, পূর্বে রামসাগর বোনারপাড়া-দিনাজপুর পর্যন্ত চললেও এবার ট্রেনটি চলবে বোনারপাড়া রেলস্টেশন থেকে পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম (বী.মু.সি.ই) রেলস্টেশন পর্যন্ত।
তারা আরও জানান, বোনারপাড়া রেলস্টেশন থেকে সকাল সাড়ে পাঁচটায় ছেড়ে গিয়ে ট্রেনটি বী.মু.সি.ই স্টেশনে পৌঁছাবে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে।
ওই সময় দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা ২০ মিনিটে ট্রেনটি ২৪টি রেলস্টেশন অতিক্রম করে পাড়ি দিবে ২৬৪ কিলোমিটার রেলপথ। যার প্রত্যেকটি স্টেশনেই ওঠা-নামা করবে যাত্রীরা।
ভাড়ার বিষয় স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, সর্বোচ্চ ৯০ টাকায় যাত্রীরা যেতে পারবে গাইবান্ধার বোনারপাড়া রেলস্টেশন থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত। এতে সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ টাকা। ১০ কোচের (বগি) এই ট্রেনটি যাত্রীবহন করতে পারবে ৬৭৮ জন।
বন্ধের বিষয় তারা জানান, বি.মু.সি.ই-বোনারপাড়া বৃহস্পতিবার ও বোনারপাড়া-বি.মু.সি.ই শুক্রবার ট্রেনচলাচল বন্ধ থাকবে।
গাইবান্ধা ও বোনারপাড়া রেলস্টেশন সূত্রে জানা যায়, রংপুর বিভাগের বিশেষ করে গাইবান্ধা, রংপুর ও দিনাজপুরের মানুষের যাতয়াতের জন্য ২০১০ সালের ১২ নভেম্বর চালু করা হয় ‘রামসাগর এক্সপ্রেস’ ট্রেন। ওই সময় গাইবান্ধার বোনারপাড়া থেকে রংপুরের কাউনিয়া ও রংপুর হয়ে দিনাজপুর পর্যন্ত চলাচল করত ট্রেনটি।
পরবর্তী সময় জনবল সংকটসহ বিভিন্ন কারণে প্রায় দুই বছর পর ২০১২ সালের ২৪ আগস্ট বন্ধ করে দেয়া হয় ট্রেনটি।
বন্ধ হওয়ার পর থেকে আন্দোলন করে আসছিলেন গাইবান্ধা-রংপুরের নাগরিক সমাজ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনগন।
ট্রেন চালুর দাবিতে রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, নাগরিক সমাজসহ সর্বোস্তরের মানুষের আন্দোলন ও এমপি মাহমুদ হাসানের চেষ্টায় মঙ্গলবার আবারও চালু হয় রামসাগর।
উদ্বোধনের সময় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রেনটি চালু হওয়ায় আমরা অনেক খুশি। কেননা, আমরা গাইবান্ধার মানুষ চিকিৎসার জন্য প্রতিনিয়ত রংপুর যাই। রংপুরের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগের সহজ হলো।’
সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য শামসুজ্জোহা বলেন, ‘ট্রেনটি চালুর জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন করা হয়েছে, তবে ট্রেনের সময়সূচির পরিবর্তন করা দরকার।’
ট্রেন উদ্বোধনের পরে ওই ট্রেনেই জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের নলডাঙ্গা রেলস্টেশনের আধুনিকায়ন কাজের উদ্বোধন করতে রওনা হন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।