বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাবেক ধর্মমন্ত্রীর জানাজায় মানুষের ঢল

  • প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ   
  • ২৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:১৪

এর আগে রোববার রাত ১১টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের ধোপাখোলা নেক্সাস কার্ডিয়াক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

সাবেক ধর্মমন্ত্রীর বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার বাদ আসর ময়মনসিংহ নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ ময়দানে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু, ময়মনসিংহের বিভিন্ন সংসদ সদস্য, নেত্রকোনা ৪ আসনের সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানসহ বিভাগের বিভিন্ন সংসদ সদস্য ছাড়াও ময়মনসিংহ আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন অংশ নেন।

এসময় অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের মৃত্যুর খবর প্রধানমন্ত্রী জানার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের বলেছেন জানাজায় অংশ নিতে। তিনি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। মতিউর রহমানের ছিলেন মাটি ও মানুষের নেতা। তিনি সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের পছন্দের মানুষ হওয়ার কারণেই আজকে তার জানাজায় মানুষের ঢল নেমেছে। তার এমন মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।’

অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের ছেলে মোহিত উর রহমান শান্তকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, ‘শান্তর ছোট ভাই শুভ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। এখন তোমার বাবাও মারা গেলেন। মনোবল শক্ত রেখো। বাবার আদর্শ বুকে ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাও। প্রধানমন্ত্রীর স্নেহ সবসময় পাবে।’

এর আগে রোববার রাত ১১টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের ধোপাখোলা নেক্সাস কার্ডিয়াক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ময়মনসিংহের কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ। ১৯৪২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মতিউর রহমান। তার বাবার নাম আবদুর রেজ্জাক এবং মায়ের নাম মেহেরুন্নেসা খাতুন।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল থেকে পথ চলতে অভ্যস্ত এ প্রবীণ রাজনীতিক আকুয়া মডেল প্রাইমারি স্কুল থেকে ১৯৫৩ সালে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। এসময় তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায় প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় প্রথমস্থান অধিকার করেন। ১৯৫৪ সালে ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখা পড়া করেন। এরপর তিনি নকলা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি সম্পন্ন করেন। নবম ও দশম শ্রেণি পর্যন্ত ময়মনসিংহের মৃত্যুঞ্জয় স্কুলে পড়াশুনা করেন এবং ১৯৫৮ সালে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ থেকে ১৯৬১ সালে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন।

এরপর ১৯৬৪ সালে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএসসি পাস করেন তিনি। এ সময় তিনি গফরগাঁও থানার পাঁচবাগ উচ্চ বিদ্যালয় এবং মনোহরদি হাতিরদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বিএসসি শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৬৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হয়ে ১৯৬৭ সালে এমএসসি সম্পন্ন করেন। এমএসসি পাসের পর তিনি জামালপুর জেলার নান্দিনা কলেজ এবং ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে প্রাণিবিদ্যার শিক্ষক হিসেবে চাকরি করেন। তিনি স্বল্পকালীন ময়মনসিংহ কলেজেও শিক্ষকতা করেন।

অধ্যক্ষ মতিউর রহমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক ও সফল সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ঢালু যুব শিবিরের ইনচার্জ ছিলেন। তার নেতৃত্বে ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ হানাদারমুক্ত হয়।

মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একুশে পদক পান তিনি। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম ছিলেন এই নেতা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আগামীকাল পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করার কথা রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর