বিশিষ্ট ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা, ক্রীড়া সংগঠক, প্রকাশক, লেখক ও জেমকন গ্রুপের চেয়ারম্যান কাজী শাহেদ আহমেদ মারা গেছেন। রাজধানীর একটি হাসপাতালে সোমবার রাত ৭টা ১৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
কাজী শাহেদ আহমেদের জন্ম ১৯৪০ সালে, যশোরে। ইঞ্জিনিয়ারিং পাসের পর তিনি ১৪ বছর আর্মিতে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির প্রতিষ্ঠাকালীন প্লাটুন কমান্ডারদের একজন। ১৯৭৯ সালে ‘জেমকন গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তার ব্যবসায়ী জীবন শুরু।
কাজী শাহেদ আহমেদের তিন সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে কাজী নাবিল আহমেদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং বর্তমান সংসদ সদস্য। একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি।
মেজো ছেলে কাজী আনিস আহমেদ খ্যাতিমান লেখক। তিনি ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন, অনলাইন পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউন ও সাহিত্য পত্রিকা বেঙ্গল লাইটস-এর প্রকাশক।
ছোট ছেলে কাজী ইনাম আহমেদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক।
বাংলাদেশে প্রকাশিত পত্রিকায় যে আধুনিকতার উপস্থিতি তার শুরুই হয়েছিল কাজী শাহেদ আহমেদের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘আজকের কাগজ’ পত্রিকার হাত ধরে। তৎকালীন মুক্ত মত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এই সংবাদপত্র।
কাজী শাহেদ ‘খবরের কাগজ’ ও ‘আজকের কাগজ’-এর সম্পাদক ও প্রকাশক।
বাংলাদেশে প্রথম অর্গানিক চা বাগানের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। তার অলাভজনক উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ ও কাজী শাহেদ ফাউন্ডেশন। তার স্ত্রী আমিনা আহমেদ একজন বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী।
লেখালেখিতেও কাজী শাহেদ আহমেদ সোনালি স্বাক্ষর রেখেছেন। তার প্রবন্ধগ্রন্থ ‘ঘরে আগুন লেগেছে’ প্রকাশিত হয় ১৯৯৫ সালে। ২০১৩ সালে তার তেয়াত্তর বছর বয়সে প্রথম উপন্যাস ‘ভৈরব’ প্রকাশিত হয়। আত্মজীবনী ‘জীবনের শিলালিপি’ প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে। একই বছর প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘পাশা’। ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘দাঁতে কাটা পেনসিল’। ২০১৮ সালে প্রকাশ পায় উপন্যাস ‘অপেক্ষা’। ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে ‘ভৈরব’ এবং প্রকাশের অপেক্ষায় আছে আত্মজীবনীর ইংরেজি অনুবাদ ও অন্যান্য গ্রন্থ।