পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় লাগাতার বলাৎকারের শিকার হয়ে শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলার আসামি মাদ্রাসার পরিচালককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
রোববার রাতে সেলিম গাজী নামের ওই মাদ্রাসা পরিচালককে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাব-৮-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান।
৩৮ বছর বয়সী সেলিম গাজী পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বড় ডালিমা গ্রামের আবুল কালাম গাজীর ছেলে। তিনি বড় ডালিমা মদিনাতুল উলুম কওমিয়া হাফিজিয়া, নুরানী কিন্ডার গার্টেন ও এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক।
সেলিম গাজীর ধারাবাহিকভাবে যৌন নির্যাতনে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ১৩ বছর বয়সী শিশুটি ওই মাদ্রাসার হাফেজ বিভাগের ১৭ প্যারার ছাত্র ছিল।
সোমবার দুপুরে র্যাব-৮-এর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুল হাসান জানান, ২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে শিক্ষা সফরে যান মাদ্রাসার শিক্ষকরা। ওই রাতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে বলাৎকার করেন পরিচালক সেলিম গাজী। পরে বিষয়টি কারও কাছে প্রকাশ না করার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন তিনি। এতে ওই শিশু বিষয়টি কারও কাছে প্রকাশ করেনি। শিক্ষা সফর থেকে ফিরে শিশুটিকে বিভিন্ন সময় পরিচালক সেলিম গাজী তার কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন নির্যাতন করেন। এতে শিশুটি পেটে ব্যথাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়। তখন সেলিম গাজী তাকে নানা ওষুধ সেবন করিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। গত ২ আগস্ট ভুক্তভোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢামেকে ছাত্রটির মলদ্বারে ক্যান্সার ধরা পড়ে। পরে ঢাকার মহাখালী জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শিশুটির মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় রোববার শিশুর বাবা রেজাউল করিম বাদী হয়ে বাউফল থানায় হত্যা মামলা করেন।
র্যাব অধিনায়ক জানান, মামলার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়নের ভরতকাঠি এলাকায় অভিযান চালানো হয়। রাত দুইটার দিকে ওই এলাকা থেকে সেলিম গাজী গ্রেপ্তার হন।
আসামিকে বাউফল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে র্যাব অধিনায়ক জানিয়েছেন।