নিজ প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা চেক ডিজঅনার মামলা করে সাজা খাটানোর ঘটনায় এক প্রতিষ্ঠানের সাবেক কর্মী মো. জাহাঙ্গীর আলম ইউনুছকে ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেছে চেম্বার আদালত।
সোমবার আপিল বিভাগের বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেয়।
চেক ডিজঅনার মামলা করে সাজা খাটানোর ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলম ইউনুছকে ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করে গত ২৪ আগস্ট আদেশ দেয় বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক বেঞ্চ।
এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন জাহাঙ্গীর আলম। সোমবার ওই শুনানিতে চেম্বার আদালতে তার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা, মো. অজিউল্লাহ, সঙ্গে ছিলেন আমিনা আক্তার।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী আমিনা আক্তার বলেন, ৩০ লাখ জরিমানা করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিল, আমরা সেই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করি। আদালত শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশটি স্থগিত করে দেয়। আগামী ৮ সপ্তাহের জন্য আদেশটি স্থগিত করে আদালত।
এ আইনজীবী বলেন, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে চেক চুরির যে অভিযোগ করেছেন সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। পাওনা বাবদ টাকার বিপরীতে মামলার বিবাদী চেক লিখে দিয়েছেন। সেখানে তারই স্বাক্ষর রয়েছে।
হাইকোর্টের আদেশের পর মামলার বিবাদীপক্ষের আইনজীবী মো. লুৎফর রহমান বলেন, চট্টগ্রামের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী এ কে এম গোলাম ফারুকের কর্মচারী মো. জাহাঙ্গীর আলম ইউনুছ দুটি চেক চুরি করে ২০১১ সালে চাকরি ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে মো. জাহাঙ্গীর আলম ইউনুছ সাবেক মালিক কে এম গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১৬ নভেম্বর ১০ লাখ ৮ হাজার টাকার চেক ডিজঅনারের একটি মামলা করেন।
তিনি বলেন, এর দুই বছর পর ২০১৩ সালে ২০ লাখ টাকার আরেকটি চেক ডিজঅনারের মামলা করেন। ওই মামলা চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের যথাক্রমে যুগ্ম দায়রা জজ ২য় এবং ৭ম আদালতে বিচার হয়। ২০১১ সালে দায়ের প্রথম মামলাটিতে আসামি এ কে এম গোলাম ফারুকের সাজা হয় এবং ২০১৩ সালে করা দ্বিতীয় মামলাটিতে আসামি খালাস পান।
পরে খালাসের আদেশের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে বাদী জাহাঙ্গীর আলম ইউনুছ হাইকোর্টে ফৌজদারি আপিল করেন। অন্যদিকে সাজার আদেশের বিরুদ্ধে আসামি এ কে এম গোলাম ফারুক প্রথমে চট্টগ্রামে আপিল করেন এবং পরবর্তীতে হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন আপিল করেন।
এরপর হাইকোর্টে দুই মামলার এক সঙ্গে শুনানি হয়। শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট উভয় মামলায় আসামি এ কে এম গোলাম ফারুককে খালাস দেয় এবং মিথ্যা মামলা করায় সাবেক মালিককে হয়রানি করার জন্য বাদী মো. জাহাঙ্গীর আলম ইউনুছকে ৩০ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেয়।