মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার একমাত্র গণগ্রন্থাগার প্রায় তিন বছর ধরে বন্ধ। ফলে উপজেলার অনেক মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন জ্ঞানচর্চা থেকে। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার ফলে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সব বই ও আসবাবপত্র। গরু ছাগলের মলে জমাট বেধে আছে একমাত্র গণগ্রন্থাগারটি।
সরেজমিনে রোববার সকাল ১০টার দিকে দেখা যায়, কমলগঞ্জ গণগ্রন্থাগারের প্রবেশ পথে তালা ঝুলানো। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার কারণে গ্রন্থাগারের সামনে ঝোপঝাড় সৃষ্টি হয়েছে। গ্রন্থাগারের দেয়ালে ধুলাবালি জমে আছে। বর্তমানে গরু ছাগলের ঘরের মতো এ গ্রন্থাগার পরিণত হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস ও জনবল সংকটের কারণে গ্রন্থাগার বন্ধ রয়েছে। গ্রন্থাগারের দায়িত্বে থাকা কর্মচারী মৌলভীবাজার বদলি হওয়ার কারণে গ্রন্থাগার চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। খুব শিগগিরই জনবল নিয়োগ করে গ্রন্থাগার চালু করা হবে।
কমলগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্র রিজভী ও জান্নাতুল কারিমা বলেন, ‘দীর্ঘদিন গ্রন্থাগার বন্ধ থাকায় বই পড়া থেকে বঞ্চিত হয়েছি। গ্রন্থাগার নিয়মিত চালু করা হোক। নিয়মিত চালু থাকলে আমাদের আশা যাওয়া সবসময় থাকবে। কলেজ শেষ করে যে সময়টা মোবাইলে দেই সেটা না করে এখানে এসে বই পড়ে সময় পার করতে পারবো।’
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা জানান, লাইব্রেরিয়ান না থাকায় ও করোনার প্রভাবে তিন বছর ধরে গণগ্রন্থাগারের কার্যক্রম বন্ধ আছে। এতে এলাকার যুবসমাজ বইয়ের বিপরীতে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছে। সমাজের একটি বড় অংশ যখন মোবাইল অনলাইনে বিভিন্ন গেমস খেলা, মাদকসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে তাদেরকে পাঠাগারমুখী করতে গণগ্রান্থাগারটি পুনরায় চালু করা প্রয়োজন।
তারা বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় গ্রন্থাগারটি চালু না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি অন্ধকারে পরিণত হয়ে আছে। যদি দ্রুত সময়ের গ্রন্থাগার চালু করা হলে পাঠক বিমুখ তরুণ সমাজকে বইয়ের প্রতি আগ্রহী করে তোলা যাবে।
উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষকদের কাছ থেকে জানা যায়, উপজেলার একমাত্র গণ গ্রন্থাগার বন্ধ থাকার কারণে জ্ঞান চর্চা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়াও গ্রন্থাগারের পাশেই কমলগঞ্জ সরকারি গণ মহাবিদ্যালয়সহ কয়েকটি স্কুল ও মাদ্রাসা রয়েছে। গ্রন্থাগার চালু করলে শিক্ষার্থীসহ বইপ্রেমীরা বই পড়তে আসবেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন বলেন,‘আমি এ উপজেলায় নতুন এসেছি। দ্রুত সময়ের খুজ খবর নিয়ে এটা চালু করার ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’