সুনির্দিষ্ট স্থগিতাদেশ ছাড়া শুধুমাত্র আইনজীবীর দেয়া সার্টিফিকেটের ওপর ভিত্তি করে কোনো মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি আতোয়ার রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন।
সম্প্রতি ওই রায়ের লিখিত কপি প্রকাশ হয়েছে, যা নিউজবাংলার হাতে এসেছে।
রায়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হাইকোর্টে আদেশ ছাড়া শুধুমাত্র ফাইল করেই আইনজীবীর সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়ানি বা ফৌজদারি কোনো মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা যাবে না। এক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের সুনির্দিষ্ট স্থগিতাদেশের নির্দেশনা থাকতে হবে। এজন্য বিচারিক আদালতের প্রতি প্রয়োজনীয় সার্কুলার জারি করতে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, উচ্চ আদালতে কোনো আবেদন ফাইল করেই আইনজীবীর সার্টিফিকেট দিয়ে বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়। এভাবে আদালতের স্থগিতাদেশ ছাড়া শুধুমাত্র আইনজীবীর সার্টিফিকেট নিয়ে মামলা স্থগিত রাখা যাবে না। এতে মনে হয়, সমান্তরাল কোর্ট তৈরি হয়। তাছাড়া ন্যায় বিচারে বাধাগ্রস্ত এবং মামলার জট তৈরি হয়। এ অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। এ বিষয়ে আপিল বিভাগের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাও রয়েছে।
মামলার কার্যক্রমের উপর সুনির্দিষ্ট স্থগিতাদেশ না থাকলে শুধুমাত্র আইনজীবীদের সার্টিফিকেট দিয়ে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা যাবে না বলেও উল্লেখ করেছে হাইকোর্ট।
রওশন শেখ এবং অন্যান্য বনাম রাষ্ট্র মামলায় গত ১ জুন এ রায় দেন হাইকোর্ট।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এসএম শফিকুল ইসলাম বাবুল, তার সঙ্গে ছিলেন, রবিউল ইসলাম রানা, অন্যদিকে ছিলেন কামরুল আলম কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল ওহাব।
মামলা থেকে জানা যায়, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় দীঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা লতিফুর রহমান পলাশ হত্যা মামলার আসামি রওশন শেখসহ অন্যান্য আসামি মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন। সেই রুল খারিজ করে আদালত এ রায় দেন।
আইনজীবী রবিউল ইসলাম রানা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আমরা আবেদন করি। আদালত আমাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে মামলা স্থগিত করে রুল জারি করে। দীর্ঘদিন পর সেই রুলের শুনানি করতে গেলে মামলার কার্যক্রম স্থগিত দেখে জানতে চান, ল’ইয়ার সার্টিফিকেটে আমরা কী দিয়েছি। তখন আমি আদালতকে দেখিয়েছি কোর্ট যে আদেশ দিয়েছেন আমি সেই সার্টিফিকেটই দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘তখন যেহেতু করোনার সময়ে ভার্চুয়ালি শুনানি হয়েছে, সেই ডকুমেন্ট এখনও অনলাইনে রয়েছে। পরে শুনানি নিয়ে আদালত রুল খারিজ করে বাইরে গিয়ে এ নির্দেশনা দিয়েছে।’
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে যাবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপিলের চিন্তা করছি, তবে এখনও সিদ্ধান্ত নেইনি।’