বদলি হওয়ার খবর শোনার পর থানায় লাগানো এসি, টেলিভিশন, আইপিএস ও সোফা খুলে নিয়েছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। পরে আসবাবপত্রগুলো থানা থেকে তার কোয়ার্টারের সামনে রাখা হয়। এভাবে থানার আসবাবপত্র খুলে নেয়ার ঘটনায় এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে থানার পুলিশ সদস্য উদয় এবং বহিরাগত আরিফ ও এক ভ্যানচালকের সহায়তায় থানার ওই আসবাবগুলো খোলা হয়। এরপর সেগুলো থানা হতে ভ্যানযোগে ওসির কোয়ার্টারে নেয়া হয়।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার স্বাক্ষরিত আদেশে ভূঞাপুর থানার ওসি ফরিদুল ইসলামকে সেখান থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। তার এই বদলির আদেশের পরদিন শুক্রবার রাতে থানার এসি, টেলিভিশন, সোফা ও আইপিএস খুলে নেন ওসি।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ীরা জানান, জিনিষপত্র ব্যক্তিগত কাউকে দেয়া হয় না। থানায় যে ওসি আসবে, সেই ব্যবহার করবে। এজন্যই জিনিষপত্রগুলো কেনার জন্য টাকা দেয়া হয়েছে। ওসি সাহেব যে এত নিচু মন-মানসিকতার, সেটা জানা ছিল না।
থানার পুলিশ সদস্য উদয় বলেন, ‘ওসি স্যারের নির্দেশে জিনিষগুলো খুলে নেয়া হয়েছে। এরপর সেগুলো ভ্যানযোগে ওসির কোয়ার্টারে রাখা হয়।’
নিকরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভপতি জুরান মণ্ডল বলেন, ‘থানার সৌন্দর্যবর্ধন ও থানায় যে ওসি আসুক, তারা যেন সুবিধাটা ভোগ করতে পারে, সেজন্য বালুমহালের টাকা দিয়ে জিনিষগুলো দেয়া হয়েছে। সেগুলো থানায় ব্যবহারের স্বার্থে, কারও ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নয়। শুনেছি, তিনি সেগুলো খুলে নিয়ে যাচ্ছেন; এটা ঠিক নয়। তাকে ব্যক্তিগতভাবে সেগুলো দেয়া হয়নি, তার চেয়ারটাকে সম্মান করে দেয়া হয়েছে।’
ভূঞাপুর থানার ওসি (তদন্ত) লুৎফর রহমান জানান, ‘ওসির টাকায় কেনা জিনিষপত্র হলে তো তিনি নিতেই পারেন। এই বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’
বদলি হওয়া ভূঞাপুর থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেগুলো থানা থেকে খোলা হয়েছে, সেগুলো ব্যক্তিগত টাকা দিয়ে কেনা। সুতরাং সেগুলো আমি নিতেই পারি।’
জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, ‘কারও অনুদানের টাকায় কিনে থাকলে সেগুলো ওসি নিতে পারেন না। যদি ব্যক্তিগত টাকায় কেনা হয় তাহলে নিতে পারবেন। যদিও এই বিষয়ে কিছুই জানি না।’