বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিপৎসীমা ছাড়িয়ে তিস্তা, পানিবন্দি অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ

  • প্রতিনিধি, লালমনিরহাট    
  • ২৬ আগস্ট, ২০২৩ ১৪:৪৩

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদীসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বাড়ছে। তবে পানি এখনও বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি না বাড়লে তিস্তার পানি দ্রুত নেমে যাবে।’

লালমনিরহাট-কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন তিস্তাপাড়ের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ।

শনিবার তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে দুপুর ১২টায় বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ও ডালিয়া পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লালমনিরহাট-কুড়িগ্রামে জেলার তিস্তাপাড়ের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েকদিনের অনবরত বৃষ্টিপাত আর উজানের পানিতে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। শনিবার সকাল ৯টা থেকে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের ৮টি উপজেলার ২২টি ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এলাকার অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদীসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বাড়ছে। তবে পানি এখনও বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি না বাড়লে তিস্তার পানি দ্রুত নেমে যাবে।’

এদিকে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, ‘অনবরত বৃষ্টিপাত আর ভারতের উজানের পানি আসা অব্যাহত থাকায় তিস্তাপাড়ে স্বল্প মেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। লালমনিরহাটে ধরলা নদীর পানিও বাড়ছে তবে তা এখনও বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। দীর্ঘদিন বালু ভরাট হয়ে তিস্তার মূল ভূখণ্ডের সমান হয়ে যাওয়ায় তিস্তায় একটু পানি বাড়লেই তা নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে চলে যায় এবং নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি আরও বাড়তে পারে।’

লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর গ্রামের কৃষক সুপেন চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘শনিবার সকালে ঘরের ভেতর ২ থেকে ৩ ফুট পানি প্রবেশ করেছে। তাও আমরা এখনও বাড়িতে রয়েছি। তিস্তায় আরেকটু পানি বাড়লে আমরা বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাব।’

কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট এলাকার বাসিন্দা সুনীতি রানী জানান, সন্তানদের নিয়ে খাটের ওপর বসে আছেন তিনি। ঘরের ভেতর দিয়ে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আরেকটু পানি বাড়লে তারা ঘরে থাকতে পারবেন না। অনেকে বাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানে চলে গেছেন।

আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধান এলাকার কৃষক ফজলার রহমান জানান, খাটের ওপর দিয়ে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তারা বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর। গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তার ছয়টি মুরগি ও তিনটি হাঁস ভেসে গেছে নদীর পানিতে।

রাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নে ৬ থেকে ৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। চরাঞ্চলের পানিবন্দি লোকজন চলে এসেছেন। আমন ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে।

এদিকে লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বলেন, ‘তিস্তাপাড়ে পানিবন্দি লোকজনের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। তাদেরকে খাদ্যসহ অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে তাৎক্ষণিক সহায়তা করার প্রস্তুতি রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর