যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বসে বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জি দিনাজপুরের ফুলবাড়ীকে নিয়ে চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগে করেছেন তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডি দিবস উপলক্ষে শনিবার দুপুরে তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘২০০৬ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলে পালিয়েও গেলেও লন্ডনে বসে ফুলবাড়ী নিয়ে নানান চক্রান্ত শুরু করেছে অনেকেই। তারা লন্ডনে বসে ফুলবাড়ীকে দেখিয়ে শেয়ারবাজারে ব্যবসা করছে।
‘ইতিমধ্যে তারা একটি চীনা কোম্পানির সাথে যুক্ত হয়েছে। সেই ব্যবসা ফুলবাড়ীতে নির্বিঘ্নে করার জন্য আন্দোলনে অংশ নেয়া নেতাদের নামে মামলা দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘২০০৬ সালের তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে এশিয়া এনার্জিসহ বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানি বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। ফুলবাড়ী আন্দোলন শুধু কয়লা রক্ষা না; এ আন্দোলন ছিল ফুলবাড়ীর মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষার, প্রাণিসম্পদ রক্ষার, বাংলাদেশকে রক্ষার।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, ‘এ আন্দোলনের মূল দাবি ছিল, জনগণের সম্মতি ছাড়া কোনো কিছু করা যাবে না। উন্নয়নের নামে কোনো প্রকার ধ্বংসযজ্ঞ চালানো যাবে না। এখন যদি কেউ ভাবে, এই আন্দোলন আর নাই, তাহলে সেটা ভুল। ১৭ বছর পার হয়েছে, কিন্তু এ অঞ্চলের মানুষ এখনও জাগ্রত আছে। যদি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় কোনো বিদেশি কোম্পানি এখানে আবারও ষড়যন্ত্র করে আবারও যেকোনো সময় বিস্ফোরণ হবে। এটি যাতে না হয় সে জন্য আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাব।
‘সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, তাই আমি সংশ্লিষ্ট সকল রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানাব, যেই ক্ষমতায় আসুক, তাকে এই ছয় দফার অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে। এটি শুধু এই অঞ্চলের মানুষের দাবি নয়, এটি পুরো বাংলাদেশের মানুষের দাবি। ফুলবাড়ী গণঅভ্যুত্থান বিশ্বের প্রাণ-প্রকৃতি বিনাশী প্রকল্প থেকে রক্ষা করার আন্দোলন। তাই ফুলবাড়ী গণঅভ্যুত্থানের দাবি মানে বিশ্ব গণঅভ্যুত্থানের দাবি। আমরা ক্ষমতাসীন দলসহ সকল রাজনৈতিক দলকে এই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকার বিশেষ দাবি জানাচ্ছি।’
সকালে দিবসটি উপলক্ষে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি, ফুলবাড়ী পৌর মেয়র ও ‘আমরা ফুলবাড়ীবাসী’সহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে ২৬ আগস্টে নিহতদের স্মরণে পৌর শহরে শোক র্যালি হয়। পরে শহীদবেদিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন র্যালিতে অংশ নেয়া লোকজন।