বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি: উপজেলা চেয়ারম্যান-পৌর মেয়র মুখোমুখি

  • প্রতিবেদক, সিলেট   
  • ২৫ আগস্ট, ২০২৩ ২৩:১০

আওয়ামী লীগের এই দুই নেতার মুখোমুখি অবস্থানের কারণে তাদের অনুসারীদের মধ্যেও উত্তজেনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে দু’পক্ষ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া ও বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান। এ নিয়ে দুজনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একে অপরের বিষোদ্গার করছেন।

আওয়ামী লীগের এই দুই নেতার মুখোমুখি অবস্থানের কারণে তাদের অনুসারীদের মধ্যেও উত্তজেনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে দু’পক্ষ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুনু মিয়ার বিরুদ্ধে সরকারের বরাদ্ধকৃত নানা উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে বিষোদ্গার করে আসছেন পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান। তবে এতদিন এসব অভিযোগের বিষয়ে কিছু বলেননি নুনু মিয়া।

সম্প্রতি সরকারি বরাদ্দের নামে ৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা জামাল আহমদ।

মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের অক্টোবরে উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়ার কাছে বাথরুমসহ গভীর নলকূপ ও কালভার্ট নির্মাণের জন্য আবেদন করেন তিনি। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার পিএসের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ১১টি পরিবারের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে ওয়াশ ব্লকের জন্য টাকা দেন। অন্য একটি পরিবারের কাছ থেকে আরও ২০ হাজার টাকা, তেঘরি মসজিদের জন্য ১০ হাজার টাকা এবং ৪টি কালভার্টের জন্য আরও ৩০ হাজার টাকাসহ মোট ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা জমা দেন। এছাড়া ওয়াশ ব্লকের জায়গা পরিদর্শনের জন্য সুহেল শিকদার নামে এক ইঞ্জিনিয়ারকে আরও ৮ হাজার টাকা দেন তিনি। কিন্তু পরিদর্শন শেষে এখন পর্যন্ত তিনি কোনো বরাদ্দ পাননি।

এই মামলার পরই ক্ষেপে যান উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়া। মামলার জন্য পৌর চেয়ারম্যান মুহিবুরকে দায়ী করে তাকে সতর্ক করে নিজের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করেন নুনু মিয়া।

ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘আমি আমার মায়ের কসম দিয়ে বলছি, মুহিবুর রহমান সাবধান, এতদিন আমি শুধু ধৈর্য্য ধরেছি। তোমার দৌড় কোথায় তা আমি জানি। মুহিবুর রহমান গম চুরির মামলায় জেল খেটেছেন, এটা কেউ ভুলে নাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আর যদি আমার বিশ্বনাথের সাধারণ কোনো মানুষকে খারাপ ভাষায় কথা বলেন, সাবধান করে দিচ্ছি, আর বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না।’

মেয়রের সকল বক্তব্য প্রত্যাহার করার হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘তা না হলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন নিয়ে পৌর মেয়রের সকল অন্যায়ের মোকাবিলা করবো।’

এর আগে সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান নিজের বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুনু মিয়াকে ‘চোর’ আখ্যায়িত করেন। এ বিষয়ে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করা এক ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘প্রবাস থেকে যারা এসে জনপ্রতিনিধি হন, তাদের একটা গুনাবলি থাকে যে, প্রবাসীরা ঘুষ-দুর্নীতির ঊর্ধ্বে থাকে। কিন্তু এর ব্যতিক্রম শুধু বিশ্বনাথের নুনু মিয়া। উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এত দুর্নীতির কথা উঠলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

মেয়র মুহিব বলেন, ‘এতসব অন্যায় ও দুর্নীতির প্রমাণ আমার কাছে আছে, আর আমি তা উপর মহলে পাঠিয়েছি। কিন্তু মেয়র হিসেবে জনগণকে সচেতন করা ছাড়া আমার কিছু করার নাই। তাই আমি এইসব অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে জনসাধারণকে অবহিত করেই যাচ্ছি। আর সেটা নির্ভয়ে করে যেতে চাই। কারণ আর যাতে বিশ্বনাথের জনগণ প্রতারিত না হন।’

এ প্রসঙ্গে জানতে উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়া শুক্রবার বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। মেয়র ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান বলেন, ‘নুনু মিয়ার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভোগীরাই আমার কাছে এসব অভিযোগ নিয়ে আসেন। এলাকাবাসীর স্বার্থে আমি সবসময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাব।’

এ বিভাগের আরো খবর