ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে এতদিন যারা ‘ভারপ্রাপ্ত’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, তাদের ‘ভারমুক্ত’ করার নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত এ চিঠি গত ২২ আগস্ট পাঠানো হয় বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগের একটি সূত্র।
এ চিঠির একটি কপি পেয়েছে নিউজবাংলা। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া নিউজবাংলাকে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল বলতে জেলা, মহানগর থেকে শুরু করে ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটিকে বোঝায়, কিন্তু এ চিঠির ক্ষেত্রে জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা এবং জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা কমিটিগুলোকে নির্দিষ্ট করে এ চিঠি দেয়া হয়।
চিঠিতে দলটির কার্যনির্বাহী সংসদের সর্বশেষ বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয়, গত ১২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় বাসভবন গণভবনে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সর্বশেষ বৈঠকে যারা জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা এবং জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা কমিটিতে ‘ভারপ্রাপ্ত সভাপতি’ বা ‘ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক’ পদে দায়িত্ব পালন করছেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের পূর্ণ দায়িত্ব প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
গত ১২ আগস্ট আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সর্বশেষ বৈঠকে ভারপ্রাপ্তদের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সাংবাদিকরা বিভিন্ন সূত্রে সে খবর প্রকাশ করলেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ নিয়ে প্রকাশ্য বা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি। অবশ্য এ আলোচনার সূত্রপাত আরও আগে।
গত ৬ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় বাসভবন গণভবনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের কেন্দ্রীয়, জাতীয় নেতাদের পাশাপাশি জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের পাশাপাশি দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তথা সংসদ সদস্য, মেয়র, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভা চেয়ারম্যানরাও অংশ নেন। সেদিনের বৈঠকে তৃণমূল নেতারা একযোগে ভারপ্রাপ্তদের ভারমুক্ত করার দাবি তুলে ধরেন।
ধারণা করা হচ্ছে তৃণমূলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই দলের সভাপতি ভারমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বৃহত্তর ফরিদপুরের একটি জেলায় ‘ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক’ হিসেবে দায়িত্ব করে আসা এক নেতা এ প্রতিবেদককে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘দলে দীর্ঘদিন ধরে শ্রম দিয়েছি। দুঃসময়ে অনেক ত্যাগ ও অবদান আছে আমার। বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদকের মৃত্যু হলে আমি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাই।‘দল আমার নিষ্ঠা, মেধা, শ্রম, ত্যাগ ও অবদানকে মূল্যায়ন করেছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের এ আস্থার প্রতিদান সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে দেব।’ পিরোজপুরে কানাইলাল বিশ্বাস, বান্দরবানে লক্ষ্মীপদ দাস, ফরিদপুরে জামাল উদ্দিনসহ অনেকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।