ভরা মজলিসে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দিচ্ছিলেন খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু। হঠাৎ সজোরে চিৎকার করে উঠে তাকে থামিয়ে দেন স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম মোহসীন রেজা। তিনি এমপিকে আখ্যা দেন দলীয় উসকানিদাতা বলে।
বুধবার বিকেলে খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের কলনা আমিনিয়া ফজিল মাদ্রাসার মাঠে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় ঘটনাটি ঘটেছে। সভার ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এর আগে ২০২১ সালেও স্থানীয়রা তাকে কাদা ছুড়ে অপমান করেছিলেন। এবার সরাসরি অপমানের শিকার হলেন দলীয় নেতার দ্বারা।
ভিডিওতে দেখা যায়, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি বলছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে গণমানুষের দল, এখানে কর্মীদের উচ্ছ্বাস থাকবে, কর্মীরা স্লোগান দিয়ে এগিয়ে আসবে। স্লোগান হচ্ছে এই দলের প্রাণ।’
তাৎক্ষণিক কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম মোহসীন রেজা দাঁড়িয়ে সংসদ সদস্যের দিকে হাতের ইশারা করে বলে ওঠেন, ‘এখানে উসকানি দেবেন না, উসকানিমূলক বক্তব্য দিলে হবে না। আপনি আর দলের ১২টা বাজাবেন না। অনেক করেছেন। আমরা কিন্তু এতোদিন কোনো কথা বলিনি, আপনি উসকানি দেবেন না।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম মোহসীন রেজা বলেন, ‘শোকের মাসের প্রোগ্রামগুলোতে এমপি প্রতিদিন ১০/১২ জন ছেলে নিয়ে উপস্থিত হন। এমপি যখন বক্তব্য দেন তখন শুধু ওই ছেলেগুলো স্লোগান দেয়। অন্য নেতাদের বেলায় দেয় না। এতে দলের সিনিয়র নেতা-কর্মীদের অপমান করা হয়, এ বিষয়টি এমপি সাহেব বুঝতে চান না।
‘এই প্রোগ্রামের সময়ও একই কাজ করলে আমি নিষেধ করেছি। কিন্তু তারা আমার কথা না শুনে স্লোগান দিতেই থাকে। সংসদ সদস্যও তার বক্তব্যে উসকানিমূলক কথা বলতে শুরু করেন। এ সময় আমি প্রতিবাদ করি।’
তবে ঘটনার প্রসঙ্গে জানার জন্য এমপি আক্তারুজ্জামান বাবুকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের পহেলা জুন কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে জনতার রোষানলে পড়েছিলেন খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু। ওই দিন দুর্যোগে বিধ্বস্ত মানুষ তাকে কাঁদা ছুড়েছিলেন, যা দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছিল।