তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘জঙ্গি ধরলে বা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই মির্জা ফখরুল সাহেব কিংবা বিএনপির অন্য নেতারা তার বিরুদ্ধে কথা বলেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, দেশে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই তাদের গাত্রদাহ হয় কেন।’
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতর সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে ‘শেখ মুজিবুর রহমান থেকে জাতির পিতা’ আলোকচিত্র সংকলন এবং ‘রক্তাক্ত মাগুরা: প্রেক্ষিত-মুক্তিযুদ্ধ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রী।
প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার খালেদা বেগম, গ্রন্থকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুন নাহার, মোহাম্মদ নাছিমুল কামাল, প্রকাশক আবু হাশেম প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
‘দেশে জঙ্গি নেই, আওয়ামী লীগ সাজানো জঙ্গি নাটক করছে’- বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্য সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্র্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যেমন চেয়ারম্যান তেমন মহাসচিব। আগে খালেদা জিয়া বলেছিলেন যে দেশে কোনো জঙ্গি নেই। কিছু মানুষকে ধরে এনে আটক করে রাখা হয়, তারপর চুল-দাড়ি লম্বা হলে জঙ্গি আখ্যা দেয়া হয়। আর গতকাল (মঙ্গলবার) ফখরুল সাহেব বলেছেন, কিছু ধার্মিক লোককে ধরে নিয়ে গিয়ে জঙ্গি আখ্যা দেয়া হচ্ছে।
‘চেয়ারম্যান যে লাইনে কথা বলেছেন, মহাসচিব যদি সেই লাইনে কথা না বলেন তাহলে তো মহাসচিবের দায়িত্ব থাকবে না। এসব বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণ হয়- দেশে জঙ্গিদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্ব, যেটি আমরা আগে থেকেই বলে এসেছি।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা না করলে আমরা জঙ্গি নির্মূল করতে পারতাম। কারণ বিএনপির যে জোট, সেই জোটের মধ্যেই জঙ্গিরা আছে। আর বিএনপি নিজেই সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে কানাডার আদালত থেকে পাঁচবার রায় পেয়েছে।
‘আমেরিকার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিএনপিকে টায়ার-ফোর সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সুতরাং তারা নিজেরা যেহেতু সন্ত্রাসী, সে জন্য কোনো জঙ্গি ধরলে তাদের গাত্রদাহ হয়।’
২৫ ও ২৬ আগস্ট বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের গণ-মিছিল, হাঁটা-মিছিল, দৌড়ানো-মিছিল, বসা-কর্মসূচি শুধু কর্মীদেরকে চাঙ্গা রাখার জন্য। জিও-পলিটিক্স বা ভূ-রাজনীতির যেসব খবর পত্র-পত্রিকায় এসেছে সেগুলোর কারণে তাদের মধ্যে হতাশা-অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সে জন্য তারা রাত ৩টায়ও সংবাদ সম্মেলন ডাকছে।’
বিএনপির দু’টি টেলিভিশনের ‘টক-শো’ বর্জনের ঘোষণা নিয়ে প্রশ্নে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘এতে তারা সেখানে গিয়ে কথা বলার সুযোগটা হারাচ্ছে। এখন দু’টি বর্জন করেছে, ক’দিন পর আরও চারটি বর্জন করে কি না, আরও ক’দিন পরে বলে কি না গণমাধ্যমই বর্জন করলাম, সেটিই আমার আশঙ্কা।’
ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর যোগদান সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ব্রিকস উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জোট। সেখানে আমন্ত্রণ জানানোর মানেই হচ্ছে বাংলাদেশ যে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ তা স্বীকার করে নেয়া। এই জোটে যোগ দিলে আমাদের অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে সেটাই স্বাভাবিক।’
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করেন ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: নিউজবাংলা
শিক্ষকতাও অব্যাহত রেখেছেন তথ্যমন্ত্রী
রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয় ও নিজ এলাকার উন্নয়নে দায়িত্ব পালনে শত ব্যস্ততার মাঝেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়া অব্যাহত রেখেছেন ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার বিকেলেও মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিতে যান তিনি।
বেলজিয়ামের লিম্বুর্গ ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাম থেকে পরিবেশ রসায়নে ডক্টরেট এবং বিশ্ব পরিবেশ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার জন্য ২০১৫ সালে গ্রিন ক্রস ইন্টারন্যাশনাল সম্মাননায় ভূষিত হন ড. হাছান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগে খণ্ডকালীন অধ্যাপক হিসেবে এখন সম্মান শ্রেণির অষ্টম সেমিস্টারে আর্থ বায়োস্ফিয়ার বা পৃথিবীর জীবমণ্ডল বিষয়ে ক্লাস নিচ্ছেন তিনি।
করোনা মহামারির মধ্যেও তিনি অনলাইনে পাঠদান করেছেন। মহামারির প্রকোপ কমে এলে আবার শ্রেণিকক্ষে ফিরেছেন। দিনে দিনে বেড়ে যাওয়া ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি অধ্যাপনা অব্যাহত রেখেছেন।