ক্ষমতাসীন যে আওয়ামী লীগ বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিচ্ছে না, সেই আওয়ামী লীগই এক সময় এই ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচনের জন্য টানা আন্দোলন করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে গণঅধিকার পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত ‘নাগরিকদের সাংবিধানিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে, এটা বলে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। তারা তো নিজেদের প্রয়োজনমতো সংবিধান তৈরি করেছে, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করেছে। অথচ এ আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য টানা আন্দোলন করেছিল। তখন এটা জায়েজ হলে এখন হবে না কেন?’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যে সংবিধানটি রয়েছে তা আওয়ামী লীগের তৈরি করা সংবিধান। যেখানে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না, কোনো পরিবর্তন করা যাবে না। অথচ সংবিধান তো মানুষের জন্যই তৈরি করা হয়। তাহলে পরিবর্তন করা যাবে না কেন?
‘আসলে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, তারা নিজেদের এ দেশের মালিক মনে করে। দেশটা যে জনগণের, তা আর মনে করে না তারা। এ ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এখন শক্ত একটা ঝাঁকুনি দরকার।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে তরুণদের ছাড়া পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। এসব বিষয়ে তাদের উপস্থিতি কম দেখছি। এটা নিয়ে ভাবতে হবে। পরিবর্তনটা কিন্তু তরুণদেরই করতে হবে। রাষ্ট্র পরিবর্তনে তরুণরাই মূল ভূমিকা পালন করে। পূর্ব ইতিহাস ঘাটলেই সেটার সত্যতা দেখা যায়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজ এক পত্রিকায় দেখলাম আমাকে মিথ্যাবাদী বলা হয়েছে। নাম ধরে গালিগালাজ করা রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়। অবশ্য আওয়ামী লীগের মধ্যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার নেই।
‘সবসময় মারমুখী আচরণ আর অনর্গল মিথ্যাচারের রাজনীতি। তারা দেশের যে প্রবৃদ্ধির কথা বলে, তা পুরোটাই নিজেদের তৈরি। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে তারা দেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করছে। আমাদের লক্ষ্য একটাই, এদের সরিয়ে একটা জনগণের সরকার তৈরি করা।’
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন লেখক এহসান মাহমুদ, পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, সাংবাদিক মাহবুব মোর্শেদ, এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলয়মান চৌধুরী, বিএনপি যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন প্রমুখ।