সাঁকোটি বেশ দীর্ঘ। পথচারী চলার সময় সেটি দোলে, থরথর করে কাঁপে। অনেক স্থানে বাঁশ-খুঁটি পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে।
ভগ্নপ্রায় বাঁশের সাঁকোটির ওপর দিয়ে অতি কষ্টে ও সাবধানতা অবলম্বন করে পারাপার হন লোকজন। অনেকে সাইকেল মাথার ওপর তুলে এক হাত দিয়ে বাঁশ ধরে পার হন।
এমন দৃশ্য দেখা যায় মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়নের নতুন আন্ডারচর ও চরফতে বাহাদুর ইউনিয়নের নতুন চরদৌলাত খাঁন গ্রামের মধ্যবর্তী আড়িয়াল খাঁ নদের শাখা একটি খালে। এর ওপর নেই কোনো সেতু।
প্রাচীন খালটির ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওই এলাকার পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
বর্ষা এলে শুরু হয় চরম দুর্ভোগ। ঝড়বৃষ্টিতে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে সাঁকো পারাপার। ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের।
পাঁচ গ্রামের বাসিন্দাদের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয়। ফলে যাতায়াত, মৎস্য ঘেরে খাবার পৌঁছানো, মাছ ও কৃষিপণ্য পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হয় প্রতিনিয়ত।
স্থানীয়রা জানায়, এলাকাবাসীর উদ্যোগে নির্মিত বাঁশের এ সাঁকো দিয়ে ওই খাল পারাপার হন পথচারীরা। সাঁকোটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে চাঁদা তুলে নিজেদের উদ্যোগে এর সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করে আসছেন স্থানীয়রা।
তারা আরও জানায়, প্রতিদিন এ পথে চিঠিরচর, নতুন আন্ডারচর ও নতুন চরদৌলত খাঁনসহ পাঁচটি গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এ ছাড়া এ সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, কিষাণ-কিষাণী, ব্যবসায়ীসহ হাজারো মানুষ।
খালের ওপর পাকা সেতু না থাকায় স্থানীয় কৃষকদের মাছ, ধান ও কৃষিপণ্য আনতে দুর্ভোগ হচ্ছে।
এ ছাড়া বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে কৃষিপণ্য পরিবহন সম্ভব না হওয়ায় উভয় পারের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য পার্শ্ববর্তী হাট-বাজারে নিতে পারেন না।
একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, সাঁকো পার হয়ে স্কুল-কলেজে যেতে হয়। সাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় অনেকে পানিতে পড়ে যায়।
আবু আলেম সরদার, নজরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, খোকন বেপারী ও লোকমান ঢালীসহ স্থানীয় কয়েকজন জানান, এই খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। নির্বাচন এলেই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা এখানে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। ভোটে পাস করার পর সেতু আর হয় না।
ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ওই স্থানে সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহিম মুরাদ সরদার বলেন, ‘সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) আবেদন করা হবে।’
কালকিনি উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, ‘জ্যেষ্ঠ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ও খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’