মাদারীপুরে স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে স্বামী আমির হোসেন নিজেই এখন কারাগারে।
সোমবার দুপুরে মাদারীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালতে মাথায় ব্যান্ডেজ লাগিয়ে মামলা দায়েরের জন্য হাজির হন আমির। এসময় বিচারকের বুদ্ধিমত্তায় ধরা পড়ে যান তিনি।
আমির হোসেন মাদারীপুর পৌরসভার নতুন শহর এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরে মাদারীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালতে স্ত্রীর ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করতে উপস্থিত হন আমির হোসেন। আদালত চলাকালে বিচারক মামলার বাদী আমির হোসেনের কাছে ঘটনার বিবরণ জানতে চান। এ সময় বাদী আমির হোসেন আদালতকে জানান, স্ত্রী আঁখি ব্যবসা করার জন্য তার কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা ধার নিয়েছেন। সেই ধারের টাকা চাইতে গেলে শ্বশুর বাড়ি সদর উপজেলার কেন্দুয়া এলাকার ১ নম্বর আসামি ভায়রা ইসরাফিল চৌকিদার, ২ নম্বর আসামি ভায়রার বড় ছেলে সজীব চৌকিদার, ৩ নম্বর আসামি ভায়রার ছোট ছেলে শিহাব চৌকিদার, ৪ নম্বর আসামি শাশুড়ি আয়শা বেগম, ৫ নম্বর আসামি স্ত্রীর বড় বোন লাখি বেগম, ৬ নম্বর আসামি স্ত্রী আঁখি বেগম মিলে বাদীকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং মাথায় ছয়টি সেলাই রয়েছে বলে আদালতকে অবগত করেন। আমির মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলেও আদালতকে অবগত করেন।
তবে বাদীর কথাবার্তায় বিচারকের সন্দেহ হলে তিনি বাদীর মাথার ব্যান্ডেজ খুলতে বলেন। আদালতে উপস্থিত বহু আইনজীবীর সামনে বাদীর মাথার ব্যান্ডেজ খোলা হলে কোনো সেলাই না থাকায় মিথ্যা অভিযোগ দায়েরের কারণে আদালত বাদী আমির হোসেনের মামলা না নিয়ে উল্টো তাকেই জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া হাওলাদার বলেন, ‘মাদারীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালতে স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করতে এসে বিচারকের চৌকস বুদ্ধির কাছে ধরা পড়েন মামলার বাদী। মিথ্যা তথ্য দিয়ে স্ত্রীসহ অন্যান্যদের ফাঁসানোর চেষ্টা করায় আমির হোসেনকে আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এভাবে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে মামলা দায়ের করার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনায় বাদীকে কারাগারে আসামি হিসেবে পাঠিয়ে আদালতের বিচারক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন। এজন্য আমি আইনজীবীদের পক্ষ থেকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।’