সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের কাটাগাংয়ে সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকসহ বেইলি সেতু ভেঙে পড়েছে। ট্রাকে থাকা চালক ও ২ শ্রমিকের মধ্যে দু’জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। আরেক শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় এই দুর্ঘটনার পর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় পরিবহন শ্রমিকরা এই দুর্ঘটনার জন্য সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছে।
তবে সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ বলছে, এই সেতুতে ওঠার আগে ১০ টনের অধিক ওজন বহন নিষিদ্ধ থাকার সাইনবোর্ড রয়েছে। সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা ৫শ’ বস্তা সিমেন্টসহ ৩০ টনের অধিক ওজনের ট্রাক সেতুতে ওঠায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নারায়ণগঞ্জ থেকে ৫শ’ বস্তা সিমেন্টসহ জগন্নাথপুর উপজেলা সদরে আসছিল ট্রাকটি। বিকেল ৪টার দিকে জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কে ইছাগাঁওয়ের পাশের কাটাগাঙে স্টিলের বেইলি সেতুতে ট্রাকটি উঠতেই সেতু ভেঙে সেটি নদীতে পড়ে তলিয়ে যায়।
এ সময় চালকসহ ট্রাকে থাকা তিনজনই ট্রাকের সঙ্গে নদীর পানিতে ডুবে যান। দেড় ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় চালক ফারুক মিয়া ও শ্রমিক জাকির মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে ফারুকের বাড়ি সিলেটের ভোলাগঞ্জে। আর জাকিরের বাড়ি সিলেটের তোফাকুল এলাকায়।
স্থানীয় পরিহন শ্রমিকদের অভিযোগ, সেতুটি দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জোড়াতালি দিয়ে এটি যান চলাচলের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল। একাধিকবার সেতুর পাটাতন খুলে পড়ায় যান চলাচল বন্ধ থেকেছে। মঙ্গলবার বিকেলে পারাপারের সময় সেতু ভেঙে ট্রাক ও ট্রাকের চালকসহ তিনজন কাটাগাঙে ডুবে যায়। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
তারা জানান, আঞ্চলিক এই মহাসড়ক চালুর পর থেকেই বাড়ছে গাড়ির চাপ। ৫২ কিলোমিটার পথ কমায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য জেলা শহরে আসছে এই পথ দিয়েই। কাটাগাঙ্গের সেতুটি জোড়াতালি দিয়ে চালু রাখার কারণে প্রায়ই যান চলাচলে সমস্যা হতো। এখন ভেঙে যাওয়ায় ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘এই সেতুতে ওঠার আগেই সড়কের পাশে ১০ টনের বেশি ওজনের যানবাহন উঠতে বারণ করে সাইনবোর্ড দেয়া আছে। অথচ ৫শ’ বস্তা সিমেন্টসহ দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটির ওজন ছিল ৩০ টন। আর সেজন্য এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। পুলিশকেও বিষয়টি জানানো আছে।
‘এই সেতুর পাশ দিয়ে আরেকটি আরসিসি সেতু নির্মাণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এজন্য বেইলি সেতুটি মজবুত করে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছিল।’
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার এহসান শাহ্ বলেন, ‘সড়কে চলাচলকারী পরিবহন চালকদের পুলিশ সবসময় সতর্ক করে দেয়। এরপরও কিছু যানবাহন চলে যায়। শতভাগ দেখভাল করা সম্ভব হয় না।’