বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জরিমানার অঙ্ক দেখে জ্ঞান হারালেন মোটরসাইকেল চালক

  • প্রতিনিধি, শরীয়তপুর   
  • ২১ আগস্ট, ২০২৩ ২৩:২৪

ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকায় মামলা করে ৫ হাজার টাকা জরিমানার রশিদ নেছারের হাতে দেন ওই কর্মকর্তা। জরিমানার অঙ্ক দেখে মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে যান তিনি।

শরীয়তপুরে ট্রাফিক পুলিশের করা মামলায় জরিমানার অঙ্ক দেখে মোটরসাইকেল চালকের অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শরীয়তপুর জেলা শহরের মনোহর বাজার চৌরাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

অজ্ঞান হওয়া চালক নেছার উদ্দিন গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়ার আব্দুল লতিফ জমাদ্দারের ছেলে। মোটর সাইকেলে যাত্রী পরিবহন করে সংসার চলে তার।

স্থানীয়রা জানায়, যাত্রী নিয়ে শরীয়তপুর থেকে নাগেরপাড়া যাচ্ছিলেন চালক নেছার উদ্দিন। জেলা শহরের মনোহর বাজার চৌরাস্তার মোড়ে মোটরসাইকেলের গতি রোধ করেন ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই ফজলুল করিম। কাগজপত্র চেক করে ড্রইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ দেখতে পান তিনি।

এসময় ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকায় মামলা করে ৫ হাজার টাকা জরিমানার রশিদ নেছারের হাতে দেন ওই কর্মকর্তা। জরিমানার অঙ্ক দেখে মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে যান তিনি। পরে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ওই মোটরসাইকেল চালক।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে মোটরসাইকেলের কিস্তির চাপ থাকার পাশাপশি নিজেকে গরীব ও অসহায় দাবি করে জরিমানার টাকা কোথা থেকে আসবে, এই চিন্তায় মাথা ঘুরে পড়ে যান বলে দাবি ওই চালকের।

চালক নেছার উদ্দিন বলেন, ‘বাবা-মা, স্ত্রী ও এক সন্তানের সংসারে আমিই একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তি। কাজ না থাকায় কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনে যাত্রী পরিবহন করে যা আয় হয় তা দিয়ে কিস্তি পরিশোধ করি এবং সংসার চালাই। প্রতিমাসে ৮ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হয়। প্রতিদিনের আয় থেকে সংসার চালিয়ে কিস্তির টাকা দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার ওপর ৫ হাজার টাকা জরিমানা কোথা থেকে আসবে?

‘ট্রাফিক পুলিশের ওই কর্মকর্তাকে অনেক অনুরোধ করেছি, আমার পক্ষে এত টাকা পরিশোধ করা সম্ভব নয়। বাবা-মাকে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। আমার সব কাগজপত্র ঠিক ছিল, শুধু ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ দুই মাস আগে শেষ হয়েছে। কিছু টাকা জোগাড় করে তা দিয়ে লাইসেন্স করে নেয়ার কথাও বলেছিলাম। কিন্তু তিনি কিছুই শুনতে চাননি। ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে রশিদ ধরিয়ে দিয়েছে। এই টাকা আমার পক্ষে দেয়া অসম্ভব। তাই জরিমানার টাকার চিন্তায় মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম।’ঘটনার প্রতক্ষদর্শী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ মামলা দেয়ার পর মোটরসাইকেল চালক অজ্ঞান হয়ে পরে যায়। পুলিশের সার্জন তাকে পানি কিনে এনে খাইয়ে দিয়েছে। এরপরও সে সুস্থ না হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিছুক্ষন পর সে সুস্থ হয়ে ফিরে আসে।‘শরীয়তপুর সদর ট্রাফিক বিভাগের টিএসআই ফজলুল করিম বলেন, ‘নেছার উদ্দিন নামের ওই মোটরসাইকেল চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ হয়ে গেছে। তাছাড়া তিনি মোটরসাইকেলে ২ জন যাত্রী পরিবহন করছিলেন। ট্রাফিক আইন অনুযায়ী তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার অঙ্ক দেখে সে অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাৎক্ষনিক পানির ব্যবস্থা করে তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছি। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে এখান থেকে নিয়ে যায়।‘শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক শরিফ উর রহমান জানান, ‘সোমবার বিকেলের দিকে এক মোটরসাইকেল চালককে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। এসময় তার জ্ঞান ছিল না, পরবর্তীতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে। জ্ঞান ফিরে এলে তার সহযোগিরা তাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে গেছে।‘

এ বিভাগের আরো খবর