জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিরোধী দল নির্মূলে সরকার রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট হয়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল হচ্ছে। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তারা (সরকার) সর্বশক্তি প্রয়োগ করে এবং রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে যে কোনো উপায়ে (নির্বাচনের) মাঠ থেকে বিরোধী দলগুলোকে অবৈধভাবে সরিয়ে দিয়ে আবার ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করবে।
‘সরকারের এখন প্রধান লক্ষ্য বিরোধী দলগুলোকে দমন করে ও তাড়িয়ে দিয়ে নির্বাচনের মাঠ পরিষ্কার করা।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে এবং বর্তমান অবৈধ সরকারের নির্দেশে পুলিশ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে। এখন যা চলছে এটাকে আমরা রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাস বলতে পারি। বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং অন্য সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানও একইভাবে কাজ করছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের কাছে কিছু কিছু ডকুমেন্ট আছে যেগুলো আমরা প্রয়োজন হলে দেখাব। তাতে বিচারকদের বলা হচ্ছে- ‘তাড়াতাড়ি মামলা শেষ করো। এত তারিখের মধ্যে মামলা শেষ করতে হবে…। সাক্ষী না আসলে তাকে অ্যারেস্ট করে নিয়ে এসে সাক্ষ্য দাও।
‘একদিকে পুলিশি নির্যাতন, অন্যদিকে বিচারে দ্রুত সাজা দেয়ার ভয়াবহ কর্মসূচি তারা নিয়েছে। লক্ষ্য একটাই, তারা পুরো মাঠ খালি করে দিতে চায়।’
ফখরুল বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার করে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কথা বলছে; যাতে করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যায় এবং দায় বিরোধীদের ওপর চাপানো যায়। তবে এটা নতুন কিছু নয়। অতীতেও তারা একইভাবে এই কাজ করেছে।’
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। আমরা কোথায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলাম? যা কিছু সন্ত্রাস তা তো আপনার করছেন। বন্দুক আপনাদের হাতে, পিস্তল আপনাদের হাতে, আইনও আপনাদের হাতে।’
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ছয় নেতাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার নিয়ে ডিবি পুলিশের বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এটা একটা নির্লজ্জ মিথ্যাচার এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য।
‘রাষ্ট্রীয় বাহিনী হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ ক্ষমতাসীন দলের হয়ে কাজ করছে। ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। ডিবি তাদের প্রেস ব্রিফিংয়ে যে অস্ত্রগুলো দেখিয়েছিল তা প্রাগৈতিহাসিক যুগের।’
ফখরুল বলেন, ‘ডিবি বলছে যে নির্বাচন বানচালের জন্য বিএনপি এসব অস্ত্র সংগ্রহ করেছে। আমরা বিস্মিত যে তারা এখন পুরোপুরি রাজনৈতিক দলের পক্ষে কথা বলছে। বোঝা যায় যে তাদের বক্তব্য রাজনৈতিক।’
বিএনপি মহাসচিব শনিবার নারায়ণগঞ্জ ও হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের হামলা এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনসহ বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতাদের দ্রুত মুক্তি দাবি করেন।