বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাঁতারে বিশ্বরেকর্ড গড়তে চান পল্লি চিকিৎসক বকুল

  •    
  • ১৮ আগস্ট, ২০২৩ ১০:৫৬

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নরসিংদী পর্যন্ত সাঁতারের আয়োজক কমিটির সদস্য বজলুর রহমান ফাহিম বলেন, ‘সাঁতরে ৩০০ কিলোমিটার নদীপথ অতিক্রম করেছেন বকুল। টানা ৩০ ঘণ্টা সাঁতার কাটার পরও স্বাভাবিক ও সুস্থ ছিলেন তিনি। আশা করি বকুলের এই সাঁতারের রেকর্ড বিশ্বরেকর্ড করতে সংশ্লিষ্টরা নজর দেবেন।’

নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের খোদাদিল্লা এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চিকিৎসক সিদ্দিকুর রহমানের ৫৫ বছর বয়সী ছেলে বকুল সিদ্দিকী। জেলার রায়পুরা উপজেলার মনিপুরা বাজারে কাজ করেন পল্লি চিকিৎসক হিসেবে। এর বাইরে সদরের খোদাদিল্লায় বাড়ির পাশেও ফার্মেসি আছে বকুলের।

চিকিৎসাসেবার বাইরে এ চিকিৎসকের নেশা সাঁতার। প্রতি বছরই নিজ খরচে আয়োজন করেন সাঁতার প্রতিযোগিতার। তার লক্ষ্য বিশ্বরেকর্ড গড়া।

চিকিৎসা নিতে আসা লোকজনকেও সাঁতারের পরামর্শ দেন বলে জানান বকুল। ছবি: নিউজবাংলা

বকুলের সাঁতারের এ নেশা ছোটবেলা থেকেই জানিয়ে তার মা ময়মনা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ১৯৯৬ সালে স্থানীয় দালালের মাধ্যমে প্রবাসের উদ্দেশে পাড়ি জমান বকুল, কিন্তু সেখানে গিয়ে বিপদে পড়ে নদীপথ পাড়ি দিয়ে থাইল্যান্ড থেকে যান মালয়েশিয়ায়।

‘তখন অনেক চিন্তায় ছিলাম। আল্লাহর কাছে দোয়া করার ফলে দেশে ফিরে আসে আমার ছেলে। যেভাবে সাঁতার কাটছে বকুল, তার মনের ইচ্ছা যেন আল্লাহ পূরণ করেন’, বলেন সাঁতারপ্রেমী চিকিৎসকের মা।

বকুলের সঙ্গে সাঁতারে নামার কথা জানিয়ে স্থানীয় সাঁতারু শাহিন মিয়া ও হারুন মিয়া বলেন, প্রতি বছর বকুলের সঙ্গে সাঁতার প্রতিযোগিতা দিতে নদীতে নামেন, কিন্তু কোনোভাবেই হারাতে পারেন না তাকে।

এ দুজনের ভাষ্য, ২০১৯ সালের বর্ষায় মেঘনায় ১৭ কিলোমিটার সাঁতরে স্থানীয়দের নজরে আসেন বকুল। ২০২০ সালে পাঁচ ঘণ্টা ১০ মিনিট ও ২০২১ সালে ছয় ঘণ্টা ৪০ মিনিট সাঁতার কেটে ৪০ কিলোমিটার পাড়ি দেন পল্লি চিকিৎসক। ২০২২ সালে ১৩ ঘণ্টা সাঁতরে ২১০ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দেন বকুল, যেখানে এ বছর সাঁতরে ৩০০ কিলোমিটার নদীপথ পার হন তিনি।

নিজ খরচে প্রতি বছর সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন বলে জানান বকুল। ছবি: নিউজবাংলা

চিকিৎসক সাঁতারু বকুল জানান, সবশেষ ১২ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার জিরো পয়েন্ট থেকে সাঁতার শুরু করেন। তিতাস নদ, হাওর ও মেঘনা নদীর ৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে শনিবার বিকেল ৪টা ৪৯ মিনিটে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মনিপুরা ঘাটে পৌঁছান তিনি। ২৯ ঘণ্টা ৪৯ মিনিটের পথ পাড়ি দিয়ে আসা এ সাঁতারুকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান স্থানীয়রা। তারা এক লাখ টাকা পুরস্কারও দেন তাকে।

টানা ৩০ ঘণ্টা সাঁতার কাটার পরও বকুল সুস্থ ছিলেন বলে জানিয়েছেন আয়োজক কমিটির এক সদস্য। ছবি: নিউজবাংলা

সাঁতারে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়া নিয়ে কারও মধ্যে সংশয় রাখতে চান না বকুল।

‘আমার সাঁতারে যদি কারও কোনো আপত্তি থাকে, তাহলে সরাসরি চলে আসেন আমার বাড়িতে; নিজ খরচে আবার সাঁতারের আয়োজন করব। নদীতে সাঁতরানো আমার নতুন পেশা নয়’, চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে নিউজবাংলাকে বলেন বকুল।

‘৩০০ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিতে অসুবিধা হয়নি। ৩০ ঘণ্টা সাঁতারের এই সময়ে পানি, জুসসহ স্বাভাবিক খাবারও খেয়েছি। সামনে সাঁতারে বিশ্বরেকর্ড গড়তে চাই’, যোগ করেন তিনি।

চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের নিয়মিত সাঁতার কাটার পরামর্শ দেন বলেও জানান বকুল।

‘সাঁতরে ৩০০ কিলোমিটার নদীপথ অতিক্রম করেছেন বকুল। টানা ৩০ ঘণ্টা সাঁতার কাটার পরও স্বাভাবিক ও সুস্থ ছিলেন তিনি। আশা করি বকুলের এই সাঁতারের রেকর্ড বিশ্বরেকর্ড করতে সংশ্লিষ্টরা নজর দেবেন’, বলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নরসিংদী পর্যন্ত সাঁতারের আয়োজক কমিটির সদস্য বজলুর রহমান ফাহিম।

এ বিভাগের আরো খবর