চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। ধ্বংস হয়েছে গ্রামীণ সড়ক। বিশেষ করে পাহাড়ি ঢলে শঙ্খ নদের তীরবর্তী এলাকাগুলোর অনেক রাস্তাঘাট পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। এসব এলাকায় বন্যার্ত অনেক মানুষের চিকিৎসাসেবা, ওষুধ ও খাবারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
এমন বাস্তবতায় বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছে স্থানীয় যুব সংগঠনগুলো।
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের ঢেলিপাড়া থেকে কুন্ডুকুল পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এসব এলাকায় বন্যাদুর্গত মানুষদের চিকিৎসাসেবা দিতে মাইঙ্গাপাড়া তা’লিমুল কুরআন দাখিল মাদ্রাসা, হেফজখানা ও এতিমখানায় বৃহস্পতিবার ‘ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প ও বিনা মূল্যে প্রাথমিক ওষুধ বিতরণ’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
এ ক্যাম্পে চিকিৎসা নিয়েছেন চার শতাধিক রোগী, যাদের অধিকাংশই বয়স্ক, নারী ও শিশু।
কালিয়াইশের সাঙ্গু ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফোরামের উদ্যোগে কেরানীহাটের হেলথকেয়ার হসপিটাল, প্রত্যয় একতা সংঘ, টাইগার ক্লাব, স্থানীয় যুবসমাজ ও প্রবাসীদের সার্বিক সহযোগিতায় এ আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবী অভিজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুহাম্মদ হাবিব উল্লাহ (কানন), জয়দেব বসাক, মোহাম্মদ শোয়েব, নাসরিন ফারজানা সনি ও প্রমিজ বড়ুয়া।
চিকিৎসকরা বলেন, এই এলাকার রাস্তাঘাট নষ্ট হওয়ায় মানুষের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। এই অবস্থায় অন্তঃসত্ত্বা ও বয়স্কদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়। এতে চিকিৎসাসেবার অভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু বা হতাহতের শঙ্কা রয়েছে।
সংকট মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান চিকিৎসকরা।
চিকিৎসা ক্যাম্পের উদ্যোক্তা ও সাঙ্গু ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আবু ছালেহ ছিদ্দিকী বলেন, ‘বন্যাকবলিত মানুষদের প্রতি ভালোবাসা ও সহানুভূতি জানাতে এবং মানবিক আবেদন থেকেই প্রত্যন্ত অঞ্চলে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করে চিকিৎসা ও বিনা মূল্যে প্রাথমিক ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। এটি প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য।’
এ ধরনের আরও ক্যাম্প করার পাশাপাশি ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জরুরি সেবা বন্যার্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।