স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭৫ সালের পর বিএনপির সর্বশেষ শাসনামলে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
রাজধানীর গুলশানের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি পার্কে বৃহস্পতিবার সকালে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন।
দেশের ৬৩ জেলায় ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট একযোগে জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ তথা জেএমবির বোমা হামলার ১৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
এতে দেয়া বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পরে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। অপারেশন ক্লিন হার্ট হয়েছে। আওয়ামী লীগের ২০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।
‘এসব ঘটনায় একটি মামলাও করা যায়নি। কারণ এটার জন্য আলাদা ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছিল সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে।’
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে ছিল।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের সব দলের কাছে আমার নিবেদন থাকবে, জাতীয় সংসদেও আমরা এ কথাটি বলব, অপারেশন ক্লিন হার্টের সময় যেসব পরিবারের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, তাদের মানবাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। অপরাধী হয়ে থাকলে তারও কিন্তু আইনের আশ্রয় নেয়ার সুযোগ আছে।
‘যত দাগী আসামি হোক না কেন, তার পক্ষে যদি কেউ নাও দাঁড়ায়, সরকারের দায়িত্ব তার পক্ষে উকিল দাঁড় করিয়ে ডিফেন্স দেয়ার।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৫ আগস্টের ধারাবাহিকতার সূচনা হয়েছিল আসলে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মধ্য দিয়ে। কারণ একটি বড় অংশ পরাজিত হয়েছিল। তারা চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ যেন আবারও সেই ধর্মান্ধতার দিকে ফিরে যায়।
‘১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের যারা কুশীলব, যারা সম্পৃক্ত ছিলেন, তারা পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, বাংলাদেশকে আবারও ইসলামিক রিপাবলিক অফ বাংলাদেশে পরিণত করা হবে পাকিস্তানের মতো।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শাহরিয়ার বলেন, ‘যারা বলছেন যে, তারা দেখছেন, তারা সবাইকে দেখছেন। আমরা শুনেছি, বিএনপি যে কর্মসূচি দিচ্ছে, তাদের নেতা-কর্মীদের এটা পছন্দ না। তারা লাঠি নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জনসভায় উপস্থিত হতে শুরু করেছে।
‘আমরা তাদের বিরুদ্ধে সাবধান বাণী উচ্চারণ করতে চাই, কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এই শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশে আমরা হতে দিতে পারি না; হতে দেব না। সে বিষয়টিও আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রগুলো ভালো মতো জানে, তারা দেখছেন। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাদের সার্বক্ষণিক ওয়াকিবহাল রেখেছি।’