বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়দাতারা এ অঞ্চল ব্যবহার করতে চায়: প্রধানমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১৬ আগস্ট, ২০২৩ ২০:৫৯

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাকে ক্ষমতা থেকে সরাবে আর তাদের কিছু কেনা গোলাম আছে, পদলেহনকারী আছে তাদেরকে বসিয়ে এই জায়গাটাকে নিয়ে খেলবে- এটাই হচ্ছে তাদের প্রচেষ্টা। সেসব শক্তি উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তাদের পছন্দের গোলামদের ক্ষমতায় বসাতে চায়। আর সেটা আমি ভালোভাবে বুঝতে পারি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের যেসব দেশ আশ্রয় দিয়েছে, তারা গণতন্ত্রের নামে, নির্বাচনের নামে ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। এই অঞ্চলকে ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশকে আক্রমণ ও ধ্বংস করা কারও কারও উদ্দেশ্য। তারা এদেশের উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায়।

বুধবার বিকেলে জাতীয় শোক দিবস ও জাতির জনকের ৪৮তম শাহাদাৎবার্ষিকীর স্মরণ সভায় বঙ্গবন্ধু-কন্যা এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানের দিক দিয়ে ভারত মহাসাগর, অপরদিকে প্রশান্ত মহাসাগর। এই ভারত মহাসাগরেই আমাদের বে-অফ বেঙ্গল, যার গুরুত্ব অনেক বেশি। প্রাচীনকাল থেকে এই জায়গা দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য চলে।

‘আমাদের ভারত মহাসাগরে যতগুলো দেশ আছে কারও সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব নেই; সম্পূর্ণ নিষ্কণ্টক একটা যোগাযোগ পথ। এই জলপথে আন্তর্জাতিকভাবে সবচেয়ে নির্বিগ্নে পণ্য পরিবহন হয়।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু এটা আমি জানি ও বুঝি, সে কারণে কিভাবে আমাকে ক্ষমতা থেকে সরাবে আর তাদের কিছু কেনা গোলাম আছে, পদলেহনকারী আছে তাদেরকে বসিয়ে এই জায়গাটাকে নিয়ে খেলবে। এটাই হচ্ছে তাদের প্রচেষ্টা। সেসব শক্তি উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তাদের পছন্দের গোলামদের ক্ষমতায় বসাতে চায়। আর সেটা আমি ভালোভাবে বুঝতে পারি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এদের উদ্দেশ্য গণতন্ত্র না। আজকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভিত্তিটা আমরা মজবুত করেছি, জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের পথে।

‘দারিদ্র্যের হার আমরা ৪১ থেকে ১৮ ভাগে নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্র যেটা ২৫ ভাগ ছিল সেটাকে আমরা ৫ দশমিক ৭ ভাগে নামিয়ে এনেছি। বাংলাদেশের এসব উন্নয়নের পথে এরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায়। এই একটা জিনিসই ওরা করতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু আঁতেল আছে, জানি না এসব তারা চিন্তা করে কি না। তারা ওই ওদের সঙ্গে সুর মেলায়। দুটো পয়সার লোভে তারা নানাভাবে এই কাজগুলো করে বেড়ায়।’

চক্রান্তের বিষয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদেরকে যেমন সজাগ থাকতে হবে, তেমনই অন্যান্য দেশকেও। ভারত মহাসাগরের অন্য দেশগুলো এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন আছে সেটা আমি বিশ্বাস করি।’

পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তির সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই এলাকাটা নিয়ে নানা ধরনের খেলার একটা চক্রান্ত। পার্বত্য চট্টগ্রামে ২০ বছর ধরে যেখানে সংঘাত ছিল আমি সরকারে আসার পর সেখানে আমি শান্তি ফিরিয়ে আনি। সেখানেও নানারকম অশান্তি সৃষ্টির প্রচেষ্টা।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিএনপি জানে নির্বাচন করে তারা কোনোদিন ক্ষমতায় যেতে পারবে না। জনগণের ভোটও পাবে না। সেজন্যই নির্বাচনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা আর ইলেকশন যাতে না হয় তার জন্য যত রকমের চক্রান্তে তারা লিপ্ত। তবে যতক্ষণ বেঁচে আছি, মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। আমার বাবা রক্ত দিয়ে গেছেন এদেশের মানুষের জন্য।’

বাংলাদেশের মানুষের এতটুকু ক্ষতি করে কোনোদিন ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করি না- উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু-কন্যা বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ। কোনো খেলা খেলে বাংলাদেশের ভাগ্য কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে সেজন্য দেশবাসীকেই সজাগ থাকতে হবে।’

সরকারের টানা মেয়াদে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানো, গৃহহীন-ভূমিহীনদের জমিসহ ঘর উপহার দেয়ার কার্যক্রম তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে বাংলার মানুষের কাছ থেকে নিয়ে যায়। আমাদের একটাই প্রতিজ্ঞা ছিল, বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি। এই শোক ব্যথা কষ্ট, যার আপনজন হারায় সে-ই বুঝতে পারে। তারপরও শুধু একটা প্রতিজ্ঞা নিয়েই এসেছিলাম। যে স্বপ্ন নিয়ে আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছেন। যে আদর্শ নিয়ে তিনি এই দেশ স্বাধীন করেছেন। যে লক্ষ্য নিয়ে তিনি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। যে স্বাধীনতা লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে- সেই স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে পারে না। এই স্বাধীনতা আমরা ব্যর্থ হতে দেব না। আর সেই চিন্তা থেকেই সেই শোক-ব্যথা সবকিছু বুকে সহ্য করে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি জানি আমারও সময় হয়তো সীমিত। কত বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। আমার নেতাকর্মীরা আমাকে জীবন দিয়ে বাঁচিয়েছে। যতক্ষণ বেঁচে আছি মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। শুধু বাংলার মানুষের জন্যই আমাদের এই কষ্ট। আমাদের কাজ শুধু এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা আমাদের বাড়িতে সব সময় ওঠা-বসা, খাওয়া-দাওয়া করেছে, তারাই বেইমানি করেছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। জাতির পিতাকে হত্যা করে সংবিধান না মেনে খুনি মোস্তাক নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে। রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেই জিয়াউর রহমানকে বানালো সেনাপ্রধান। ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জিয়াউর রহমান ওতপ্রোতভাবে জড়িত।’

প্রধানমন্ত্রী তার স্বজনদের জন্য সবার কাছে দোয়া চান। পাশাপাশি যে স্বপ্ন নিয়ে বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছেন, তার সেই স্বপ্ন পূরণ করার জন্যও।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন আমাদের বাংলাদেশ হবে আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন স্মার্ট বাংলাদেশ। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা ইনশাআল্লাহ আমরা গড়ে তুলবো।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর