বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কেরানীগঞ্জে গুদামে বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ৫

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১৫ আগস্ট, ২০২৩ ২৩:৪২

রাসায়নিকের গুদামে বিস্ফোরণের এ ঘটনায় নিহতরা সবাই একই পরিবারের। নিহত সোহাগের দগ্ধ আরেক মেয়ে চার বছরের তানহা আক্তার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন কমিটি গঠন করেছে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে রাসায়নিকের গোডাউনে আগুনের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচজন। নিহতরা সবাই একই পরিবারের।

নিহতদের মধ্যে সোহাগ মিয়া গদারবাগ এলাকার হানিফ মিয়ার ছেলে। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই মারা যান সোহাগের স্ত্রী মিনা আক্তার ও এই দম্পতির দেড় বছর বয়সী মেয়ে তাইয়েবা আক্তার। অপর নিহতরা হলেন সোহাগের বড় ভাই সৌদিপ্রবাসী মিলন মিয়ার স্ত্রী জেসমিন আক্তার ও তার মেয়ে ইশা আক্তার।

নিহত সোহাগের দগ্ধ আরেক মেয়ে চার বছরের তানহা আক্তার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।

সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে কেরানীগঞ্জের কালিন্দী গদারবাগ এলাকায় হাজী আবুল হাসনাতের মালিকানাধীন বাড়িতে স্বাদ গ্লাস অ্যান্ড পলিমার কারখানার রাসায়নিক গুদামঘরে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে ঘুমন্ত শিশুসহ চারজন ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা যান।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সবশেষ জেসমিন আক্তার নামের ৫০ বছর বয়সী নারীকে বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, কেরানীগঞ্জের গদারবাগ এলাকার ওই গোডাউনে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায় ভোর ৪টার দিকে। অল্প সময়ের মধ্যে সেখানে প্রথম ইউনিট পৌঁছে।

এদিকে পরিবারের পাঁচ সদস্যকে হারিয়ে পাগলপ্রায় সোহাগ ও মিলনের বাবা হানিফ মিয়া। কথা বলতে গিয়ে বার বার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন তিনি। হানিফ বলেন, ‘অহন আমি কাগো নিয়া বাঁচুম? আরেক নাতনি তানহা হাসপাতালে ভর্তি। তারও অবস্থা বেশি ভালো না।’

গুদাম থেকে তিন গজ দূরত্বে চারটি আধা পাকা ঘর। ঘরগুলোয় তিনটি পরিবারের বসবাস। আর রাসায়নিকের গুদামটি টিনশেডের।

স্থানীয় লোকজন জানান, গুদামে বিস্ফোরণে পাশের ঘরগুলোতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ঘটনাস্থলেই চারজন মারা যান। আহত হন আরও দুজন। স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘরের দেয়াল ভেঙে হতাহতদের উদ্ধার করেন।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কেরানীগঞ্জ স্টেশনের ওয়্যারহাউস পরিদর্শক মোহাম্মদ হানিফ বলেন, ‘ঘটনাস্থলে জুতা ও কলমের কালি জাতীয় রাসায়নিক দ্রব্য পাওয়া গেছে। আগুন লেগেছিল রাত ৩টার পরে। আমরা আগুনের সংবাদ পাই ভোর ৪টার দিকে।

‘কেরানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস এবং পরে সদরঘাট ফায়ার সার্ভিস ও ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তর থেকে প্রায় ছয়টি ইউনিট এসে ২ ঘণ্টার চেষ্টায় ভোর ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনে।’

মোহাম্মদ হানিফ আরও বলেন, ‘এই রাসায়নিক গুদামের মালিকের নাম মো. টুটুল মিয়া। তিনি পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টা এলাকার বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই রাসায়নিক গুদাম পরিচালনার কোনো অনুমোদন ছিল না। অবৈধভাবে টুটুল মিয়া এখানে রাসায়নিক দ্রব্য মজুত করে রেখেছিলেন।’

তদন্ত কমিটি

এদিকে রাসায়নিকের গুদামে বিস্ফোরণে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বিস্ফোরণে নিহত পরিবারের প্রত্যেককে ২৫ হাজার ও আহতদের ১৫ হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা দেন।

বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক, দাহ্য পদার্থ ও প্লাস্টিকের কারখানা ও গুদামঘর গড়ে তোলা যাবে না। এ বিষয়ে হাইকোর্ট ও সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। তারপরও কিছু কিছু অতিলোভী ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থে আবাসিক এলাকায় কারখানা ও গুদামঘর পরিচালনা করে থাকেন। এটা জঘন্য অপরাধ।’

এ বিভাগের আরো খবর