বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জামায়াতের বিচার করার দাবি তুললেন বিচারক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১৫ আগস্ট, ২০২৩ ২২:২৯

প্রধান বিচারপতির কাছে দাবি পেশ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু আহমেদ জমাদার বলেন, ‘আপিল বিভাগের রায়ে জামায়াতে ইসলামীকে বলা হয়েছে সন্ত্রাসী সংগঠন, অপরাধী সংগঠন। তাদের বিচারের জন্য আইনের সংশোধনী দরকার। কী হবে বিচার করলে। হত্যা করবে? হত্যার বিষয়টি জেনেই যুদ্ধে গিয়েছিলাম। আমি এটার বিচার করতে চাই।’

একাত্তরে অপরাধের জন্য সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার করতে প্রধান বিচারপতির কাছে দাবি জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু আহমেদ জমাদার।

প্রধান বিচারপতির কাছে দাবি পেশ করে তিনি বলেছেন, ‘আপিল বিভাগের রায়ে জামায়াতে ইসলামীকে বলা হয়েছে সন্ত্রাসী সংগঠন, অপরাধী সংগঠন। তাদের বিচারের জন্য আইনের সংশোধনী দরকার।

‘কী সাজা হবে, সেটা কেন হচ্ছে না সংশ্লিষ্ট মহলে আপনি জানুন। আমরা বিচার করতে চাই। কী হবে বিচার করলে। হত্যা করবে? হত্যার বিষয়টি জেনেই যুদ্ধে গিয়েছিলাম। আমি এটার বিচার করতে চাই।’

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা, দোয়া ও রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই দাবি করেন।

বিচারক মো. আবু আহমেদ জমাদার প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘দাখিলকৃত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিচার হচ্ছে না কেন? কেন হল না? কেন এত শঙ্কা? গতকাল রাত ১২টার সময় আমার দুই ছেলে চলে যাচ্ছে। বললাম, কোথায় যাও? বললো, পিজি হাসপাতালে যাচ্ছি।

আমি বললাম, কেন? বললো, এরা দাঙ্গা-হাঙ্গামা করতে পারে, আমাদের ম্যাসেজ দিছে তাড়াতাড়ি সেখানে যেতে। বললাম, কী দাঙ্গা? তারা বললো- দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা গেছে। এই জন্য দাঙ্গা-হাঙ্গামা হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘পরে রাতেই ঢাকার বাইরে থেকে পুলিশ এনে মোতায়েন করা হয়। কেন? এই শঙ্কা কেন আসবে এই দেশে? যে দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছি, সেখানে কেন এই ৫২ বছর পর শঙ্কা আসবে? এরা কি তাহলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চাইতেও বেশি ক্ষমতাধর? আমার তো মনে হয় তাই।

‘আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন মানুষ মারা গেছে। তার জন্য, যার শিক্ষাগত যোগ্যতা কী আমি জানি না। আল্লামা নামধারী। সে কি এতই জ্ঞানী ছিল বাংলাদেশে? তাকে পাহারা দেয়ার জন্য হাজার হাজার পুলিশ সারা রাত জাগছে! ভোরবেলা পিরোজপুরে নিয়ে গেছে। ম্যাসেজ আছে, আমার মোবাইলে আছে। এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে সাহস করতে হবে।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘কমিশন হতে হবে। কমিশনের রিপোর্ট হতে হবে, জাতির কাছে সেই রিপোর্ট থাকবে। ওই তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে বিচার হতে হবে।’

বিচারকদের শপথের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আপিল বিভাগের বিচারক এম. ইনায়েতুর রহীম বলেন- আমরা যখন বিচারক হিসেবে শপথবদ্ধ হয়েছি, আমাদেরকে মনে রাখতে হবে আমাদের এখতিয়ারটা কী? আমি কতটুকু করতে পারি, আমি কী বলতে পারবো। এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিৎ। আমরা দেশে বিপ্লব ঘটাতে চাই না। আমরা যে শপথ নিয়েছি তার মধ্যে থেকেই কাজ করতে হবে।

প্রধান বিচারপতির কাছে দাবি পেশ করে বিচারক মো. আবু আহমেদ জমাদার বলেন, ‘আমি দাবি করবো জামায়াতের বিচার করা হোক। তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা আছে। সাক্ষী-সাবুদ এখনও আছে। বিচার কেন করা হবে না?

‘রাজাকারের জন্য দেশ নয়, এটা মুক্তিযোদ্ধাদের বসবাসের জন্য। আমার আর কয়েক মাস সময় আছে। আমাকে যদি বলা হয়, এই বিচার করলে গুলি করা হবে, তবুও আমি বলবো- বিচার করবো।’

এ সময় বিচারকদের শপথের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আপিল বিভাগের বিচারক এম. ইনায়েতুর রহীম বলেন, ‘আমার মনে হয় আমরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যত বেশি আলোচনা করছি, বঙ্গবন্ধুর চর্চাটা সেখানে একেবারেই কম হচ্ছে। আমরা যে যেখানে যে দায়িত্ব পালন করছি সে দায়িত্ব থেকে বঙ্গবন্ধুর চর্চাটা করলে তার আত্মা শান্তি পাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অতীতের পরিচয় আছে, বর্তমানের পরিচয় আছে, ভবিষ্যতের পরিচয় থাকতে পারে। কিন্তু আমরা যখন বিচারক হিসেবে শপথবদ্ধ হয়েছি, আমাদেরকে মনে রাখতে হবে আমাদের এখতিয়ারটা কী? আমি কতটুকু করতে পারি, আমি কী বলতে পারবো। এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিৎ।

‘আমরা দেশে বিপ্লব ঘটাতে চাই না। আমরা যে শপথ নিয়েছি তার মধ্যে থেকেই কাজ করতে হবে। রাজনৈতিক দলের নেতা দল বদল করতে পারেন। কিন্তু আমি বিচারপতি হিসেবে যখন শপথবাক্য পাঠ করি, সংবিধানের বাইরে যাওয়ার আর সুযোগ নেই।’

বিচারক এম. ইনায়েতুর রহীম আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সুপ্রিম কোর্ট উদ্বোধন করতে এসে বলেছিলেন, আপনারা বিচারক, আইন ও সংবিধান অনুযায়ী বিচার করবেন। কিন্তু এমন কোনো ব্যাখ্যা দেবেন না, যেই ব্যাখ্যায় সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ সংবিধান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সমাজ, বাস্তবতা, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রাম মাথায় রাখতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট অনেকবার এরকম ভুল করেছে প্রেক্ষাপট বিবেচনায় না নিয়ে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ছাড়াও আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকবৃন্দ বক্তব্য দেন।

এর আগে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অন্য বিচারকদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

এ বিভাগের আরো খবর