বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢাকার কথা বলে স্বামীসহ বাড়ি ছাড়েন কুলাউড়ায় আটক শাপলা

  • প্রতিনিধি, পাবনা   
  • ১৫ আগস্ট, ২০২৩ ১৭:৩৪

গ্রেপ্তারের সময় শাপলার সঙ্গে ছিল তার দুই শিশু সন্তান। এদিকে ঘটনার পর থেকে তার স্বামী মাহাতাব হোসেনেও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

পাবনা থেকে ঢাকা যাওয়ার কথা বলে ১৫ দিন আগে বাড়ি থেকে বের হন মাহাতাব-শাপলা নামের এক দম্পতি। কিছুদিন লাপাত্তা থাকার পর জানা যায়, শনিবার (১২ আগস্ট) কুলাউড়ায় পুলিশের অভিযানে ‘জঙ্গি’ সন্দেহে আটক হয়েছেন শাপলা খাতুন।

এসময় সঙ্গে ছিল তার দুই শিশু সন্তান। এদিকে ঘটনার পর থেকে তার স্বামী মাহাতাব হোসেনেও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার আতাইকুলা থানার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর কৈজুরী গ্রামে বাড়ি এ দম্পতির। এলাকায় ভ্যান চালানোর পাশাপাশি কৃষিকাজ করতেন ৩৫ বছর বয়সী মাহাতাব। ২৪ বছর বয়সী শাপলা খাতুন ঘর সামলানোর পাশাপাশি বাড়িতে দর্জির কাজ করতেন। সংসারে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। দুজনের আয়ে মোটামুটি চলে যেত সংসার।

এদিকে শাপলার জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতায় হতবাক প্রতিবেশীরা। তবে দুই বছর আগে জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পুলিশের হাতে আটক হন মাহাতাব হোসেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দাবি, মাহাতাবের গতিবিধির বিষয়ে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু সতর্কতামূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।

চরমপন্থী অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে একসময় পরিচিত ছিল লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন। যেখানে প্রায়ই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটত। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় পাল্টেছে সে পরিস্থিতি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও উন্নতি ঘটেছে।

সরেজমিনে ওই গ্রামে গিয়ে এ প্রতিবেদক জানান, মাহাতাবের বাড়িতে টিনশেড দুটি ঘর, দুটি ঘরই তালাবদ্ধ। সাত বছর আগে আতাইকুলার রঘুনাথপুর গ্রামের কাঁচামাল ব্যবসায়ী মজনু ব্যাপারীর মেয়ে শাপলা খাতুনকে বিয়ে করেন তিনি। তাদের সংসারে ছয় বছরের এক ছেলে রয়েছে, নাম হুজাইফা আর জুবেদা নামে দেড় বছরের এক মেয়ে রয়েছে।

দুই ভাইয়ের মধ্যে মাহাতাব বড়। লেখাপড়ায় প্রাথমিকের গণ্ডি পেরোননি তিনি।

তার আরেক ভাইও ভ্যানচালক। তিনি আলাদা বাড়িতে থাকেন। মাঝেমধ্যে তারা ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে কিছুদিনের জন্য উধাও হয়ে যেতেন।

প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম ও রেজাউল প্রামাণিক জানান, ভ্যান চালিয়ে ও কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন মাহাতাব। তার স্ত্রী বাড়িতে দর্জির কাজ করতেন। কারো সঙ্গে কখনো তাদের উগ্র ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। স্বামী-স্ত্রী কবে কীভাবে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়েছেন, তা জানেন না তারা।

মাহাতাবের বাবা হাবিবুর মণ্ডল জানান, ‘১৫ দিন আগে একদিন সন্ধ্যায় দেখতে পাই বউ-বাচ্চা নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছে। কোথায় যাচ্ছে- জিজ্ঞেস করলে জানায়, তার ভায়রা আসছে মালয়েশিয়া থেকে, তাই দেখা করতে যাচ্ছে। তার পর থেকে তাদের আর খোঁজ নেই। বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও পাইনি। পরে শনিবার শুনলাম ছেলের বউ জঙ্গিতে ধরা পড়েছে। এখন আইনে যা হয় হোক।’

লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জামাল প্রামাণিক বলেন, ‘মাহাতাবের বিরুদ্ধে বছর দুয়েক আগেও কক্সবাজারে জঙ্গি সন্দেহে আটকের অভিযোগ রয়েছে। মাঝেমধ্যে এলাকায় মাহাতাবের চলাফেরা ছিল সন্দেহজনক। বিষয়টি আতাইকুলা থানার ওসিকে জানানো হয়েছিল। নিখোঁজের পর তার বাবাকে নিয়ে থানায় গিয়ে ছবিসহ সব তথ্য দিয়ে আসা হয়েছে। এখন শুনি ছেলেটা ও তার বউ জঙ্গি হয়েছে।’

আতাইকুলা থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ছেলে নিখোঁজ অভিযোগ নিয়ে মাহাতাবের বাবা এসেছিলেন। তারপর বলেছিলেন, দুই বছর আগে একবার জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তার ছেলে। পরে তারা জামিন করিয়ে নিয়ে এসেছেন। তবে নিখোঁজের বিষয়ে কোনো জিডি বা অভিযোগ কিছু দেননি।’

পাবনা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বলেন, ‘নিখোঁজদের বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স নজরদারি করে। সারা দেশে যারা নিখোঁজ হয়, সেগুলো অনলাইন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সেখানে ডাটাবেইস তৈরি হয়। অভিযানের বিষয়ে বা তল্লাশির সিদ্ধান্ত নেয় কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। আমরাও তাদের সহযোগিতা করে থাকি। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করতে গিয়ে অনেক সময় লেগে যায়। তবে মাহাতাব দম্পতির তৎপরতা ও তার বাড়িতে কারা যাতায়াত করত, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর