খুলনা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনার পর হাসপাতালে কর্মবিরতি শুরু করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে হাসপাতালে সামনের দোকান বন্ধ রেখেছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা।
সোমবার রাত ৯টার দিকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে অবস্থিত ব্লু স্কোয়ার মার্কেটে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থী নিউজবাংলাকে জানান, মার্কেটের মেসার্স বিপ্লব মেডিসিন কর্ণার নামের একটি ওষুধের দোকানে এক শিক্ষার্থী ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন। তবে দোকানদার অতিরিক্ত মূল্য চাওয়ায় তিনি প্রতিবাদ করেন। তখন তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। পরবর্তীতে অন্য শিক্ষার্থীরা গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে দোকানদাররা জড়ো হয়ে তাদের ওপর হামলা করেন।
অন্যদিকে ওষুধের দোকানদাররা দাবি করেন, ওই শিক্ষার্থী ৭০ টাকার ওষুধ কেনার পর তিনি মোট দামের ওপর ১০ শতাংশ কমিশন চেয়েছিলেন। তবে দোকানদার ওই কমিশন দিতে রাজি না হওয়ায় দুজন বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে মেডিক্যাল কলেজের হল থেকে শিক্ষার্থীরা গিয়ে ওই দোকানে ভাঙচুর চালান।
ওষুধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কয়েক দফায় সংঘর্ষ চলার পর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সোনাডাঙ্গা থানার এসআই সুকান্ত দাস বলেন, ‘পুলিশে এসে দ্রুতই দুই পক্ষকে ছত্র ভঙ্গ করতে পেরেছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্তি রয়েছে।’
সংঘর্ষের পর সরাসরি খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, আহত অবস্থায় সেখানে ২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত অবস্থায় আছেন। তারা হলেন সবুজ সরকার, আনান, নাফিজ ফুয়াদ, হাফিজ, তাহসিম, মাহাদী ও দেব চৌধুরী।
এ বিষয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের খুব বাজে ভাবে মারা হয়েছে। গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
এ ঘটনার পর খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন।
ইন্টার্ণ চিকিৎসক পরিষদের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক ডা. জ্যোতির্ময় বৈরাগী বলেন, ‘আমাদের ওপর যারা হামলা করেছে তারা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে।’
খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উপরিচালক ডা. নিয়াজ মুস্তাফিজ চৌধুরী বলেন, ‘ছাত্রদের ওপর এ ধরনের হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা চাই প্রচলিত আইন মোতাবেক পুলিশ যেন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়।’
অন্যদিকে হামলার পর আপাতত দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাসপাতালে সামনের ওষুধ ব্যবসায়ীরা।
সেখানে দোকান রয়েছে ওষুধ ব্যবসায় সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক জিল্লুর রহমান জুয়েলের।
সংঘর্ষের ঘটনায় তিনি বলেন, ‘হামলার ঘটনায় আমাদের নয় জন ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। শিক্ষর্থীরা একটি দোকানের ভেতরে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে। অন্যান্য দোকানের শাটার ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
‘যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়ানোর জন্য আমাদের দোকানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’