সরকার গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অবৈধ এই সরকার সবকিছু গ্রাস করে ফেলেছে। ফ্যাসিবাদের অন্যতম প্রধান অস্ত্র হচ্ছে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা। সরকার সেই কাজটিই করে চলেছে। আমাদের গণতান্ত্রিক ন্যূনতম অধিকারও কেড়ে নিয়েছে।’
সোমবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেল এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম ও দুঃশাসনের দেড় দশক’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই। করপোরেট গণমাধ্যম তৈরি করা হয়েছে। বড় বড় কোম্পানিগুলো টিভি চ্যানেল বা পত্রিকার মালিক। তারা সবাই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের কেউ টাকা পাচারের বিরুদ্ধে কথা বলে না। আসলে গণতন্ত্র ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সম্ভব নয়।
‘শুধু দেশের মানুষ নয়; বিদেশিরাও বলছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। অতীতে যেভাবে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলাম, আবারও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে চলে যেতে বাধ্য করতে হবে। এরপর জনগণের ভোটে একটি দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার চিরদিন ক্ষমতায় থাকতে সংবিধান সংশোধন করেছে। পুলিশ, প্রশাসন, গণমাধ্যম সবই নিয়ন্ত্রণ করছে। দেশের পুরো সমাজকে তারা নষ্ট সমাজে পরিণত করেছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, সেটা বাস্তবায়ন হয়নি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি হতে হয়েছে। ৬ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম, সহস্রাধিক নেতাকর্মী খুন করা হয়েছে। ৪০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে লক্ষাধিক মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।
‘এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে হলে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই।’
সেমিনারে ‘বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম: দুঃশাসনের দেড় যুগ’ শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের পরিচালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক রুহুল আমিন, গণফোরামের আবু সাইয়্যিদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণঅধিকার পরিষদের নূরুল ইসলাম নুর প্রমুখ।