শেরপুরের শ্রীবরদীর এক তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে যৌনপল্লীতে বিক্রির অভিযোগে লোকমান মিয়া নামের প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ১৩ আগস্ট রোববার রাতে রাজধানীর বিমানবন্দর দক্ষিণখান এলাকা থেকে লোকমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় শ্রীবরদী থানায় ৯ আগস্ট ভুক্তভোগীর মা মামলা দায়ের করেন।
২৩ বছর বয়সী লোকমান শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর নিজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
বুধবার ৯ আগস্ট গভীর রাতে ওই তরুণীকে জামালপুরের দয়াময়ী মোড়ের যৌনপল্লী থেকে উদ্ধার করে শ্রীবরদী থানা পুলিশ। ১০ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে মেয়েটিকে আদালতে হাজির করে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
মামলা ও তরুণীর স্বীকারোক্তি থেকে জানা গেছে, দুই বছর আগে ঝিনাইগাতি উপজেলায় বিয়ে হয় ভুক্তলোগী তরুণীর। সংসারে বনিবনা না হওয়ায় বিয়ের বিছুদিনের মাথায় বাবা-মায়ের কাছে চলে আসেন তিনি। তার বাবা-মা গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। স্বামীর বাড়ি থেকে এসে তিনি বাবা-মায়ের সঙ্গে গাজীপুরে থাকাতেন। এর মধ্যে মোবাইলে লোকমানের পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। দুই মাস আগে তরুণীর বাবা-মা তাকে শ্রীবরদীর দাদার বাড়িতে রেখে যায়। পরে গত ২০ জুন প্রেমিক লোকমান মিয়া তাকে বিয়ের প্রলোভনে বাড়ি থেকে ভাগিয়ে নানা জায়গায় ঘোরাঘুরির পর রাতে জামালপুরের দয়াময়ী রোডের যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেন।
ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা জানান, মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পারিবারিক সম্মানের ভয়ে কাউকে না জানিয়ে গোপনে খুঁজতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে ৫ আগস্ট তরুণীর মায়ের মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোনটি রিসিভ করতেই ওই নম্বর থেকে ‘আমাকে বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার শোনা যায়। তবে সে সময় ঠিকানা বলতে পারেনি ভুক্তভোগী তরুণী।
এ ঘটনায় গত ৯ আগস্ট তরুণীর অভিভাবক শ্রীবরদী থানায় মামলা করেন। এ নিয়ে শ্রীবরদী পুলিশ নড়েচড়ে বসে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় রাতেই তার অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে তাকে যৌনপল্লী থেকে উদ্ধার করে।
জামালপুর পুলিশ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান জানান, এ ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর থেকেই আসামি গ্রেপ্তার এড়ানোর লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় আত্মগোপনে ছিল। বিভিন্ন সূত্র ধরে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে ঢাকা জেলার বিমানবন্দরের দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সকালে আসামিকে শ্রীবরদী থানায় হস্থান্তর করা হয়েছে।