বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি আওয়ামী লীগের

  •    
  • ১৪ আগস্ট, ২০২৩ ১২:২৩

নির্বাচনী প্রস্তুতির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ফারুক খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের দল সংগ্রাম করে এ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়েছে; নির্বাচনী ব্যবস্থা শক্তিশালী করেছে। নির্বাচন কমিশন গঠন করার আইন করেছে। এর সবই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য। নির্বাচন গণতন্ত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

দেশের দুই বিভাগে মনোনয়নের কাজ গুছিয়ে এনেছেন বলে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের নেতাদের জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে দলের সবাইকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচার, অন্তর্কলহ দূর করা, দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়াসহ এক গুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি দলের বর্ধিত ও কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এসব নির্দেশনা দেয়ার আগে থেকেই জেলা পর্যায়ে নির্বাচনী সমাবেশ শুরু করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

দলীয় সূত্র বলছে, আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও অনানুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই ভোটের কথা মাথায় রেখে দল কাজ শুরু করেছে। তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

‘দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের ঢাকায় ডেকে অন্তর্কোন্দল দূর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর দলের সভাপতি দ্রুত অসম্পন্ন কমিটিগুলো অবিলম্বে সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।’

এ বছরের শুরু থেকেই জেলা পর্যায়ে নির্বাচনী সমাবেশ শুরু করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। ২৮ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় এক জনসভায় তিনি এবার প্রথম ভোট চান। এরপর চট্টগ্রাম, যশোর, কক্সবাজারসহ বেশ কয়েকটি জেলায় জনসভা করেন তিনি।

২০২২ সালের মার্চ থেকে দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের জেলা সম্মেলন শুরু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে অনেকগুলো জেলার সম্মেলন হয়। অনেক জেলায় তাৎক্ষণিক কমিটি হলেও কিছু জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি আটকে যায়। গত দুই- তিন মাসে সেগুলো সম্পন্ন করা হয়।

২০১৯ সালের নভেম্বরে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দুই অংশের সম্মেলন হলেও এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাকি আছে। এটি দ্রুত করতে না পারলে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয় গত শনিবার অনুষ্ঠিত দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে।

ওই দিনের বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি তৃণমূলের কোন্দলের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘প্রায়ই শুনি দলীয় নেতা-কর্মীরা এমপি-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে বিষেদগার করেন। দলের উন্নয়ন প্রচার না করে এমপি কী করল, সেটা নিয়ে লেগে থাকেন। এতে দলের বদনাম হয়।

‘আমি পরিস্কারভাবে বলছি, কাকে মনোনয়ন দেব, সেটা জরিপ করে দেখছি। এখনও জরিপ চলছে, কিন্তু যারা এমপিদের বিরুদ্ধে বলে, দলের বিপক্ষে বলে, তাকে মনোনয়ন দেব না।’

তিনি বলেন, ‘যারা এমপি ও দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বলে ভবিষ্যতে তাদের দলে রাখব কি না, সেটাও ভেবে দেখব।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের সাংগঠনিক সম্পাদকের উদ্দেশে বলেন, ‘পুরোনো নেতাদের বাদ দিয়ে কোনো কমিটি করা যাবে না। আমার স্বাক্ষরিত কমিটিতে যারা নেতা ছিলেন, তারা যেন বাদ না পড়ে।’

গত ৬ আগস্ট আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে যারা ভারপ্রাপ্ত ছিলেন, তাদের ভারমুক্ত করা হয়। সেটা কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়। পাশাপাশি আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের দিন রাজধানীর বাণিজ্য মেলার সাবেক স্থানে জনসভা করার বিষয়ে আলোচনা হয়।

এদিকে সেপ্টেম্বরে সিলেট, বরিশালে নির্বাচনী জনসভা করবেন বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন।

কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের আগে গত ৬ আগস্ট দলের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সারা দেশের জেলা/মহানগর/উপজেলা/পৌরসভা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা যোগ দেন। এতে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দ্বন্দ্ব-কোন্দল ও মনোমালিন্য দূর করে আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের স্পষ্ট বার্তা দেন, দেশের জন্য, জনগণের জন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে; নৌকার প্রার্থীর জন্য কাজ করতে হবে। মনে করা হচ্ছে এর মাধ্যমে তৃণমূলকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের জন্য নিযুক্ত করল ক্ষমতাসীন দলটি।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, শোকের মাস আগস্টজুড়ে সারা দেশে আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করা হবে। আর আগামী সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে কর্ণফুলীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের দ্বিতীয় ধাপ, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প এবং ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো বলছে, ক্ষমতাসীন দল এসব অর্জন সারা দেশে প্রচার করবে।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আগামী সেপ্টেম্বরে দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারে দুটি বিষয়ের জোর দেয়া হবে। সরকার প্রথমত অর্জনগুলো প্রচার করবে। দ্বিতীয়ত, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় সরকারের আমলে ‘দুঃশাসনের’ বিষয়টি জনগণের সামনে তুলে ধরবে। আর সামনে এগিয়ে যাওয়ার হাতছানিও জনগণের সামনে দৃশ্যমান করা হবে।

নির্বাচনী প্রস্তুতির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ফারুক খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের দল সংগ্রাম করে এ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়েছে; নির্বাচনী ব্যবস্থা শক্তিশালী করেছে। নির্বাচন কমিশন গঠন করার আইন করেছে। এর সবই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য।

‘নির্বাচন গণতন্ত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

চলতি বছরের শেষের দিকে বা আগামী বছরের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে নভেম্বরে তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এ বিভাগের আরো খবর