ভারি বর্ষণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে বান্দরবানে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া লোকজন বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন জানিয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাহ মুজাহিদ উদ্দিন বলেছেন, এ দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৫ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি।
বৃষ্টি ও বন্যার ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরতে শুক্রবার বিকেলে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডিসি বলেন, বিপর্যয়টি ধ্বংসের একটি ক্ষত রেখে গেছে। এটি পরিবারগুলোকে বাস্তুচ্যুত করার পাশাপাশি স্থানীয় অবকাঠামোর যথেষ্ট ক্ষতি করেছে।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দুর্যোগকবলিত প্রায় ৩৪০ জন মানুষ জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। দুর্যোগের প্রভাবটি মারাত্মক হয়েছে।
‘বন্যায় ১৫ হাজার ৮০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও ১৫ হাজার ৬০০টি ঘরবাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
কৃষি বিভাগের উদ্ধৃতি দিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘দুর্যোগকবলিত এলাকাগুলোতে কৃষি খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৮ হাজার ২৫৩ হেক্টর ফসলি জমি বন্যায় তলিয়ে গেছে।’
বন্যা ও ভূমিধসের ফলে ১০ জনের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, অবিরাম বর্ষণে থানচি ও রুমা উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর দুটি ভ্রাম্যমাণ পানি পরিশোধন ইউনিট স্থাপন করে পুনর্বাসনের পদক্ষেপ নিয়েছে। ইতোমধ্যেই এ উদ্যোগের মাধ্যমে ২ লাখ লিটার পানি বিতরণ করা হয়েছে।
‘পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও ত্রাণ তৎপরতায় যোগ দিয়েছে ও অতিরিক্ত ৫৩ হাজার ৮০০ লিটার সুপেয় পানি বিতরণ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘৯৬২ জনকে গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৮৫০টি পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকার দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৬৮ টন খাদ্যশস্য এবং ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে।’
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সাতটি উপজেলার প্রতি উপজেলার জন্য ২৪ লাখ টাকা বরাদ্দের পাশাপাশি পুনর্বাসনকাজে সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সরবরাহ করেছে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে।
এতে আরও জানানো হয়, বান্দরবান শহরে চার দিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার পর শুক্রবার থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। পানি শোধনাগার থেকে ধ্বংসাবশেষ ও পলি অপসারণের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকায় পানি সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। জেলায় ইন্টারনেট ও মোবাইল সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।