নওগাঁয় টানা ৩৮ ঘণ্টা পর কারাবন্দি চালকের মুক্তির আশ্বাসে বাস ধর্মঘট সাময়িক প্রত্যাহার করেছে পরিবহন শ্রমিকরা।
বুধবার সন্ধ্যায় জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাস মালিক গ্রুপের যৌথ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে রাত ৮টা থেকে জেলার অভ্যন্তরীণ রুটে স্বাভাবিক হতে শুরু করে বাস চলাচল।
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজাহারুল ইসলাম।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছিল পরিবহন শ্রমিকরা।
নওগাঁ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্মঘটের শুরু থেকেই জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক চলছিল। সর্বশেষ আজ বুধবার বিকেলে তাদের সঙ্গে আবারও বৈঠক হলে জেলা প্রশাসক কারাবন্দি চালক ইমরানের জামিনের বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। পরে সাধারণ শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে সাময়িকভাবে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘আগামী রোববার ইমরানের জামিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ওদিনের ফলাফল দেখবার অপেক্ষায় আছে সকল পরিবহন শ্রমিক। বাস চালুর সিদ্ধান্ত দেরিতে নেয়ায় এখনও সকল রুটে বাস চলাচল শুরু হয়নি। রাতের মধ্যেই সকল পরিবহন শ্রমিকদের কাছে এই সংবাদ পৌঁছে যাবে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে আগের মতো আবারও বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে।’
তবে ওই বাসচালককে জামিন দিতে আশ্বস্ত করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন নওগাঁর জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা।
তিনি বলেন, ‘কারাবন্দি ওই চালককে জামিন দেওয়া না দেওয়া সম্পূর্ণ বিচারকের হাতে। আদালতে বিচারাধীন মামলায় কাউকে জামিন দেয়ার এখতিয়ার জেলা প্রশাসনের নেই। জনভোগান্তী দূর করতে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দদের প্রতিনিয়ত অনুরোধ করা হচ্ছিল। সেই অনুরোধের প্রেক্ষিতে তারা বাস চলাচল স্বাভাবিক করেছে।’
গত ৩০ জুন সন্ধ্যায় শহরের মশরপুর বাইপাস এলাকায় আব্দুল জলিল শিশুপার্কের সামনে হানিফ পরিবহনের একটি বাস কয়েকটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও একটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয়। এতে পার্কে ঘুরতে আসা বেশ কয়েকজন দর্শনার্থীসহ ২১ জন গুরুত্বর আহত হয়। পরে একজনের মৃত্যুও হয়। ওই ঘটনার পরেরদিন বাসচালক ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আহতদের এক স্বজন। পরে ওই মামলায় দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ১৬ জুলাই আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন করেন চালক ইমরান হোসেন। বিচারক সেই আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। এরপর একাধিকবার চেষ্টা করেও জামিন পাননি ইমরান। এতে ক্ষুব্ধ পরিবহন শ্রমিকরা বিচার বিভাগ ও প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিয়ে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করে।