বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বারডেমে ‌‘ভুল’ অস্ত্রোপচারে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

রোগীর ভাইয়ের অভিযোগ, হার্টে পাঁচটি ছিদ্র আছে উল্লেখ করে রোগী আলী হাওয়াদারের বাইপাস সার্জারি করা হয়। এরপর অনুমতি না নিয়েই দ্বিতীয়বার ফুসফুসে অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক। আর এতেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। আলী হাওলাদার নামে ৫৫ বছর বয়সী এই রোগী মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে মারা গেছেন।

রোগীর ভাই মো. শহীদুলের অভিযোগ, বাইপাস সার্জারির পর অযথা ফুসফুসে দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক। আর এতেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

চিকিৎসক আরমান ওদুদের বরাত দিয়ে, আলী হাওলাদারের স্ত্রী দেলোয়ারা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রথমবার বাইপাস অপারেশনের পর ডাক্তার আমাকে বলেন, তিনটি রগ লাগানোটা ভুল হয়ে গেছে। তার ফুসফুস নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আরেকটা অপারেশন (ওপেন হার্ট সার্জারি) করতে হবে। আমার কাছে সই চাইলে আমি অনুমতি দেইনি।’

মো. শহীদুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২৯ জুলাই সকালে আমার ভাইকে বারডেমে ভর্তি করি। ভাইয়ের চিকিৎসা করছিলেন ডাক্তার আরমান। হার্টে পাঁচটি ছিদ্র আছে উল্লেখ করে তারা একটি অপারেশন করেন।

‘১ আগস্ট ডাক্তার জানান, ধূমপান করায় ফুসফুস নষ্ট হয়ে কালো রং ধারণ করেছে। এজন্য আরেকটি অপারেশন করতে হবে। ওইদিন রোগীর বুক ফেঁড়ে ফুসফুসে সার্জারি করা হয়। ডাক্তার বলেন যে ফুসফুস এখন ভালোর দিকে।’

শহীদুল বলেন, ‘আমার ভাই ৩০ বছরে একটা সিগারেটে টান দেয়নি। ২৯ তারিখ অপারেশনের সময় ডাক্তার বলেছিলেন যে রোগীর বুকের রগ ভালো না। পা থেকে রগ কেটে এনে লাগাতে হবে। সেই অপারেশনের পর থেকেই ভাই আইসিইউতে। তার জ্ঞান ফেরেনি।

‘এরপর ডাক্তার একদিন বলেন, ভাইয়ের নিউমোনিয়া হয়েছে। পরের দিন বলেন, স্ট্রোক, রক্তে ইনফেকশন, সঙ্গে কিডনি ড্যামেজ।’

প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘অপারেশনের পরই আমার ভাইয়ের শরীরে এত রোগ ধরা পড়ল?’

শহীদুল বলেন, ‘এ অবস্থাতে গতকাল (৮ জুলাই) দুপুরে আমার ভাবি ভাইকে দেখতে গেলে চুপচাপ দেখে ওনার অবস্থা জিজ্ঞেস করেন। তখন জানানো হয়, রোগী ঘুমিয়ে আছেন। আর দুপুর দেড়টায় তারা জানান যে আমার ভাই মারা গেছে। তবে মৃত্যুসনদে লেখা হয়েছে যে বিকেল সাড়ে ৪টায় তার মৃত্যু হয়েছে।

‘আমার ভাইয়ের পুরো শরীর তারা কাটা-ছেঁড়া করেছে। কিন্তু আমাদের একবারও বডি দেখতে দেয়নি। দ্বিতীয়বার অপারেশনের সময় আমাদের কারও অনুমতিও নেয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার প্যাকেজ নিয়েছিলাম। এরপর তারা আরও ৮৫ হাজার টাকা দাবি করে। আমরা জানাই, রোগী সুস্থ হোক। টাকা তো আমাদের কাছে নেই, তুলে দিতে হবে।

‘তখন তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, কেউ মারা গেলে দেনা রেখে জানাজা করা যায় না। অথচ তখনও আমার ভাই বেঁচে ছিলেন।’

রোগী আলী হাওলাদারের ভাই এসব অভিযোগ করে বলেন, ‘রাত ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। কিন্তু তারা কেউ আসেনি।’

তবে আলী হাওলাদারের ভাইয়ের অভিযোগ ‘আবোল-তাবোল’ বলে মন্তব্য করেন ডাক্তার আরমান ওদুদ। তিনি বলেন, ‘তাদের অনুমতি নিয়েই আমরা সবকিছু করেছি। একজন রোগীর অপারেশনের পর নিউমোনিয়া হতেই পারে। সেটা থেকে শরীরে জ্বরসহ নানা রোগ হতে পারে।’

তবে ফুসফুস নষ্ট হওয়ার কথা অস্বীকার করেন তিনি। এমনকি রোগীর স্বজনরা দুই লাখ টাকা না দিয়ে চলে গেছেন বলে তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন।

ডাক্তারের এ অভিযোগ অস্বীকার করে শহীদুল বলেন, ‘প্যাকেজের বাইরে ৮৫ হাজার টাকার মেডিসিন (ওষুধ) লেগেছে। সেটা আমরা রোগী সুস্থ হলে দিতে চেয়েছি।’

আলী হাওলাদারের স্ত্রী দেলোয়ারা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রথমবার অপারেশনের পর ডাক্তার আমাকে বললেন যে তিনটি রগ লাগানোটা ভুল হয়ে গেছে। এখন আরেকটা অপারেশন (ওপেন হার্ট সার্জারি) করতে হবে।

‘আমার কাছে সই চাইলে আমি অনুমতি দেইনি। তারা তাড়াহুড়া করে অপারেশন করতে নিয়ে যায়। আমি কোনো অনুমতি দেইনি।’

এ বিভাগের আরো খবর