দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রতিনিধি ও প্রতিষ্ঠানটির ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ইকবাল মনোয়ারকে দেয়া বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ আটজনকে এ আইনি নোটিশ দেয়া হয়েছে।
ইকবাল মনোয়ারের পক্ষে বুধবার আইনি নোটিশটি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান।
তিন দিনের মধ্যে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইউজিসি চেয়ারম্যান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, জনসংযোগ কর্মকর্তা ও মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যানকে ডাকযোগে এবং ইমেইলে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা না হলে সংবিধানের ১০২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে মামলা করা হবে।
নোটিশে বলা হয়, ‘যে অফিস আদেশের মাধ্যমে ইকবালকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সে আদেশে কোনো আইন বা বিধির উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া তার সংবাদে উল্লেখিত উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃতের আপাত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উপাচার্য তার ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই ইকবালকে বহিষ্কার করেছেন।
‘এ ছাড়া গত ৬ আগস্ট সংশ্লিষ্ট সংবাদের ব্যাখ্যা দিয়ে ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে উপাচার্যের নিকট চিঠি দিয়েছেন ইকবাল। এখন পর্যন্ত সে চিঠির কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।’
আইনি নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬-এর ৩২ নং ধারা অনুযায়ী শৃঙ্খলা বোর্ড থাকার কথা থাকলেও সে সংক্রান্ত কোনো বোর্ড এবং বিধি তৈরি হয়নি। এই অবস্থায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বেআইনি ও এখতিয়ার বহির্ভূত।’
ইকবাল তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন উল্লেখ করে নোটিশে নোটিশে বলা হয়, ‘কোনো সংবাদের বিষয়ে যদি উপাচার্য সংক্ষুব্ধ হয়ে থাকেন, তাহলে তার প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ করার অধিকার রয়েছে । তা না করে ইকবালকে বহিষ্কার করে উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।
‘ইকবাল সংবাদকর্মী হিসেবে শুধু উপাচার্যের হুবহু বক্তব্য তুলে ধরেছেন, যার অডিও রেকর্ড তার কাছে রয়েছে।’
সংবাদ প্রকাশের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ (২) (খ) অনুচ্ছেদে উল্লেখিত সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন করেছেন মর্মে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ইকবালকে তার অবস্থান ব্যাখ্যার জন্য কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে বহিষ্কারাদেশ দেয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিক ন্যায়বিচারের নীতির চূড়ান্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে।
গত ৩১ জুলাই উপাচার্যের বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ২ আগস্ট কুবি সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক ও যায়যায়দিনের প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে প্রশাসন।