শিগগির এক দফা আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি আসবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘এক দফার যুগপৎ আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি আমরা শিগগিরই ঘোষণা করবো।’
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
সবশেষ ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশমুখে ৫ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো।
৭ আগস্ট বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে এই সরকারের অধীনে কখনও কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। সে কারণে আমাদের পরিষ্কার কথা- পদত্যাগ করুন, সংসদ বিলুপ্ত করুন এবং একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যবস্থা করে তাদের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করুন।’
আর এই দাবি আদায়ে শিগগিরই এক দফার যুগপৎ আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করব আমরা।’
প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা কোন ধরনের রাষ্ট্র? কোন ধরনের প্রশাসন? কোন ধরনের শাসন ব্যবস্থা যে বিরোধী রাজনীতি করার কারণে হাইকোর্ট থেকে জামিনের পরও সংশ্লিষ্ট রাজনীতিককে ছাড়া হচ্ছে না? মামলা দেবে ধরে নিলাম…। তারপরও তাকে জেলে রাখার জন্য কী না করছে সরকার?
‘গতকাল (সোমবার) আমাদের ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ সাহেব হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। জেল গেটে আবার তাকে নতুন মামলা দিয়ে আটক করে রেখেছে। প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই এটা হচ্ছে। রাজশাহীর মিলন জামিন পেয়েছেন। জেল গেটে আবার নতুন মামলা দিয়ে তাকে আটকে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, “দেখেন কী অবস্থা। হাইকোর্টের দুজন বিচারক কত অসহায়। কাল (সোমবার) তারা বলেছেন, ‘আপনারা জামিনের আবেদন আনছেন, দেখি। আমাদের কথাও কেউ শোনে না। আমরা আদেশ দেই যে অ্যারেস্ট করা যাবে না। অ্যারেস্ট তো করেই, তারপর আবার রিমান্ডেও পাঠায়।’ ওনারা (বিচারকরা) বলছেন একথা, এটা আমার কথা না। আপনারা নিশ্চয় পত্রিকায় দেখেছেন। এই একটা অবস্থায় তারা নিয়ে এসেছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের যে এর মধ্যেও কিছু মানুষ, কিছু বুদ্ধিজীবী, কিছু পত্রিকার লোক আবার এটাকে ডিফেন্ড করে। ডিভেন্ড করার কী আছে?
‘এটা দিনের আলোর মতো সত্য যে আওয়ামী লীগ একটা ফ্যাসিস্ট পার্টি। তারা এই গভর্নমেন্টকে ফ্যাসিস্ট গভর্নমেন্ট হিসেবে চালাচ্ছে। সাধারণ মানুষের যে অধিকারগুলো সেগুলো তারা সম্পূর্ণ হরণ করে নিয়েছে।’
২৯ জুলাইয়ের কর্মসূচিতে লোকসমাগম বেশি হয়নি বলে প্রচার আছে- এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘’আপনার এই কথার সঙ্গে আমি একমত নই। এই কর্মসূচিতে আমাদের প্রচুর লোক, হাজার হাজার, লাখো নেতা-কর্মীর উপস্থিতি ছিল।
‘পুলিশ ও সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে, মারধর করেছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি হয়েছে। আপনারা দেখেছেন, আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্যের ওপর ওরা কিভাবে হামলা করেছে, লাঠিপেটা করেছে। আমাদের সিনিয়র নেতাদের পিটিয়েছে। ওরা কতজনকে মেরেছে, কতজন আহত হয়েছে, কত গ্রেপ্তার হয়েছে সেসবই গণমাধ্যমে এসেছে।’