নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলা বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেন।
আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন, কলকারখানা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন।
রায়ের পর আইনজীবী মামুন বলেন, ‘এ রায়ে আমরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করব। আজকে হঠাৎ করে ২০১৭ সালের একটা আদেশ দেখিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হলো, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম প্রধান পরিদর্শক দায়িত্ব সবাইকে ভাগ করে দিয়েছেন। এই হিসেবে তিনি যে মামলা করেছেন তা সঠিক। এখন আমাদের বক্তব্য হলো তাদের এ ডকুমেন্টস তো মূল মামলায় উপস্থাপন করা হয়নি, এমনকি মামলার রেকর্ডেও নাই। এতে আমরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করব।’
অন্যদিকে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ের ফলে বিচারিক আদালত কর্তৃক এ মামলায় অভিযোগ গঠন বৈধ। এখন এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ করতে বাধা নেই। আজকে রায়ের মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হলো আইন সবার জন্য সমান। কে কি তা দেখার সুযোগ নাই।’
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানির জন্য হাইকোর্টের এই বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেয় গত ৩ আগস্ট। আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাশের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করে। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে যায় রাষ্ট্রপক্ষ।
পরে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনানি নিয়ে দ্রুত রুল নিষ্পত্তির জন্য এই বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেয়।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় গত ৬ জুন শ্রম আদালতের বিচারক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।
এই অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। এর আগে অভিযোগ আমলে নেয়ার সময়ও হাইকোর্টে এসেছিলেন ড. ইউনূস। সে সময় দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে খারিজ হয়।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চার জনের নামে এ মামলা করেন।
মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি এখন সাক্ষ্য গ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।